পাবনা প্রতিনিধি | পাবনার গণপূর্ত অফিসে অস্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাদের মহড়ার ঘটনা ঘটে
পাবনার গণপূর্ত অফিসে অস্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাদের মহড়ার ঘটনা ঘটেছে। প্রায় এক সপ্তাহ পর সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশের পর বিষয়টি জানাজানি হলে জেলার সর্বত্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়। অজ্ঞাত কারণে গণপূর্ত বিভাগ বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে বলে বিভিন্ন সূত্র অভিযোগ করে। তবে শনিবার পাবনা পুলিশ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
পাবনা সদর থানার ওসি নাছিম আহমেদ জানান, ৬ জুন দুপুরে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ফারুক হোসেন ওরফে হাজি ফারুক, পৌর আওয়ামী লীগের স্থগিতকৃত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এ আর খান মামুন ও পাবনা জেলা যুবলীগ আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ লালুর নেতৃত্বে ৮-৯ জনের একদল ব্যক্তি শহরের ছাতিয়ানীতে অবস্থিত পাবনা গণপূর্ত অফিসে ঢোকে। তাদের মধ্যে মামুনের হাতে একটি শটগান এবং অপর একজনের হাতে আরেকটি অস্ত্র ছিল। তবে বিষয়টি নিয়ে গণপূর্ত বিভাগ কোনো অভিযোগ না করায় ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। পুলিশের পক্ষ থেকে পাবনা সদর থানায় একটি জিডি করা হয়েছে।
উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনার দিন আমি অফিসে ছিলাম, প্রথমে তারা আমার কাছে আসে এবং আমার টেবিলে অস্ত্র রেখে নির্বাহী প্রকৌশলীর খোঁজ করেন। তবে তারা কারও সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করেননি। এর চেয়ে আর বেশি কিছু বলতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।
গণপূর্ত বিভাগ পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিম বলেন, ৬ জুন আমি অফিসের বাইরে ছিলাম। পরে অফিসে এসে সিসিটিভি ফুটেজে ওই দৃশ্য দেখেছি। এ ছাড়া অফিসের লোকজনও আমাকে বিষয়টি সম্পর্কে বলেছেন। এই সশস্ত্র মহড়া ছাড়া পরবর্তীতে তারা কোনো হুমকি-ধমকি দেননি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও গণপূর্ত বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।
পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান বলেন, গণপূর্ত বিভাগ বিষয়টি নিয়ে কোনো অভিযোগ জানায়নি। ফেসবুকে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পুলিশ নিজ উদ্যোগে কাজ করছে। বিষয়টি তদন্তাধীন।
পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তাকে জানানো হলেও সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে প্রতিকার বা ব্যবস্থা নিতে বলা হয়নি।
এ ব্যাপারে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ফারুক হোসেন ওরফে হাজি ফারুক বলেন, তিনি গণপূর্ত বিভাগে কোনো কাজ করেন না। নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে দেখা করার কথা বলে মামুন ও শেখ লালু তাকে ডেকে নিয়ে গেছেন।
জেলা যুবলীগ আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ লালু বলেন, আমার কোনো দোষ নেই। আমি কারও সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণও করিনি।
পাবনা পৌর আওয়ামী লীগের স্থগিত করা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এ আর খান মামুন বলেন, লাইসেন্স করা অস্ত্র তার কাছে সব সময় থাকে। তাই সেটা নিয়ে যাওয়া দোষের কিছু না। তা ছাড়া কেউ বলতে পারবে না যে আমরা কাউকে ভয়ভীতি দেখিয়েছি। ছোট একটা ঘটনা নিয়ে জঘন্য রাজনীতি হচ্ছে।