প্রতিদিনের বাংলাদেশ।। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে গত বছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অটো পাস দেওয়া হয়। কিন্তু চলতি বছর এমনটি করা হবে না জানিয়ে ৩০ মার্চ থেকে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেয় সরকার। অটো পাস এড়াতে সিদ্ধান্ত হয় ৬০ দিন ক্লাস করিয়ে এসএসসি এবং ৮০ দিন ক্লাস করিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। কিন্তু হঠাৎ করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আগামী ২২ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এতে ২০২১ সালের পরীক্ষা আবারও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
চলতি বছরের জুন-জুলাইয়ে পরীক্ষা নেওয়ার লক্ষ্যে গত ১ এপ্রিল থেকে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রোধে চলমান বিধিনিষেধের কারণে ৫ এপ্রিল থেকে ফরম পূরণ স্থগিত করা হয়। তবে বিলম্ব ফি ছাড়াই এ ফরম পূরণের সময় বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এসএম আমিরুল ইসলাম বলেন, কোভিড-১৯ বিস্তারের কারণে বিধিনিষেধে ফরম পূরণ স্থগিত করা হয়েছে। লকডাউন শেষে বিলম্ব ফি ছাড়া এসএসসি পরীক্ষা-২০২১-এর ফরম পূরণের সময় বর্ধিত করে নতুন সময়সূচি জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে এ জন্য কোনো বিলম্ব ফি দিতে হবে না।
এএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে পরীক্ষা কেন্দ্রে তালিকা প্রকাশ, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে তা ছাপানোর জন্য বিজি প্রেসে পাঠানো ছাড়াও পরীক্ষা সংক্রান্ত সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে শিক্ষা বোর্ড।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হবে, না-কি অটো পাস করিয়ে দেওয়া হবে তা কিছুই বলা যাচ্ছে না। সবই নির্ভর করছে সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।
তবে শিক্ষাবোর্ড পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে জানিয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিব তপন কুমার সরকার গণমাধ্যমকে বলেছেন, পরীক্ষার ফরম পূরণ, প্রশ্ন প্রণয়ন ও ছাপার কাজ এগিয়ে রাখছেন তারা। যাতে সিদ্ধান্ত হলেই দ্রুত পরীক্ষা নেওয়া যায়।
শিক্ষাবোর্ডের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, তাদের পরিকল্পনা ছিল ৬০ দিন ক্লাস শেষে আগামী জুলাই মাসে এএসসি পরীক্ষা এবং দুই মাস বিরতি দিয়ে সেপ্টেম্বর মাসে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া। কিন্তু চলমান পরিস্থতির কারণে সব পরিকল্পনাই বাদ দেওয়া হয়েছে।
মহামারির কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে দেশে সব স্কুল-কলেজ বন্ধ রয়েছে। সে সময় যারা নতুন নবম ও একাদশ শ্রেণিতে উঠেছিল, হিসাব অনুযায়ী ২০২২ সালে যথাক্রমে তাদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কথা। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা কোনো ক্লাস করতেই পারেনি। চলতি বছর স্কুল-কলেজ কবে খুলবে তারও অনিশ্চয়তা রয়েছে। যদি এমন পরিস্থিতি চলতে থাকে, তবে কোনো ক্লাস না করে আগামী বছর এসব শিক্ষার্থীরা কীভাবে পরীক্ষায় বসবে, তা নিয়েও দুশ্চিন্তার শেষ নেই অভিভাবকদের।
এ বিষয়ে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মনজুর খান পরামর্শ দেন- করোনার কারণে শিক্ষার দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হচ্ছে, এটি মাথায় রেখে ‘শিক্ষা উদ্ধার’ কর্মসূচি হাতে নিতে হবে।