আনিসুর রহমান,স্টাফ রিপোর্টার।। সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের নামে গভীর রাতে বাসা থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন ও ক্রসফায়ার দেয়ার চেষ্টার ঘটনার এক বছর, মামলার অগ্রগতি না থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে দ্রুত প্রতিবেদন জমাসহ কার্যক্রম হাতে নেয়ার দাবীতে মানববন্ধন হয়েছে।
রবিবার( ১৪ মার্চ) ১২টায় কুড়িগ্রামের শাপলা চত্ত্বর এলাকায় জেলার স্থানীয় সংবাদকর্মী ও স্থানীয় সূধীমহলের আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় ।
উক্ত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক শ্যামল ভৌমিক, কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান বিপ্লব, সাংবাদিক রাজু মোস্তাফিজ, সাংবাদিক হাসিবুর রহমান হাসিব, সাংবাদিক রাশেদুল ইসলাম, গনকমিটির সদস্য মামুনুর রশিদ,রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিল্লুর রহমান প্রমুখ ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আরিফুলকে হত্যাচেষ্টার জঘন্য কর্ম কান্ডের সেই সময়ের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনসহ তিন ম্যাজিস্ট্রট জড়িত থাকায় সাগর-রুনির মামলার মতো এ মামলাটিও প্রভাবিত হচ্ছে। দ্রুত মামলার প্রতিবদন জমা নিয়ে দ্রুত রায়ের ব্যবস্থা না করলে দেশব্যাপী আন্দোলন করা হবে ।
গত বছরের ১৩ মার্চ মধ্যরাতে সেই সময়ের আরডিসি নাজিম উদ্দিন, এনডিসি রাহাতুল ইসলাম ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট রিটু বিকাশ চাকমা অভিযানের নাম করে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করে। ধরলা পাড়ে নিয়ে তাকে ক্রসফায়ারের নাম করে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। পরে তাকে আধা বোতল মদ ও দেড়শ গ্রাম গাঁজা রাখার অভিযোগ এনে মামলা দিয়ে জেলে দেয়া হয়। এ ঘটনায় চারজনকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ন্যস্ত করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলছে। কিন্তি এক বছরেও সে মামলার প্রতিবদন জমা হয়নি।
উলেখ্য, গত বছরের ১৩ মার্চ দিবাগত মধ্যরাতে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন কর্তৃক কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে বাড়ি থেকে তুলে এনে নির্যাতনের ক্রিমিনাল মামলায় এক বছরেও জমা পড়নি প্রতিবেদন। এতে ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন সাংবাদিক আরিফুল ও তার পরিবারের সদস্যরা।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের নামে জেলা প্রশাসনের একটি পুকুরের নামকরণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগানকে মধ্যরাতে ঘরের দরজা ভেঙ্গে তুলে আনা হয়। পরে মধ্যরাতেই মোবাইল কোর্টর নামে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নিয়ে নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এরই প্রেক্ষিত আরিফুল ইসলাম গত বছরের ১৫ মার্চ জেল থেকে বেরিয় এসে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবেক জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনসহ তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল মামলা দায়ের করেন। যে মামলার প্রতিবদন এক বছরও জমা পড়েনি।
এদিকে একবছরেও নিজের ওপর হওয়া নির্যাতন ও অন্যায়ের বিচার না পাওয়া নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন নির্যাতিত সাংবাদিক আরিফ। তিনি বলেন, ‘আসামিরা ক্ষমতাশালী হওয়ায় বিভিন্নভাবে মামলাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। মামলা মিমাংসার জন্য আমাকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য। শুধুমাত্র একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করার কারণে আমার ওপর যে অন্যায় ও বর্বোরোচিত নির্যাতন হয়েছে আমি তার বিচার চাই, অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’