ভৈরবে ছিনতাইকারীদের ছুরিআঘাতে এহসানুল হক (২২) নামে এক কয়লা শ্রমিক নিহত হয়েছে। সোমবার রাত ১১টার দিকে স্থানীয় বাসস্ট্যান্ড দুর্জয় মোড়ে এই ঘটনাটি ঘটে।
নিহত শ্রমিক সুনামগঞ্জের বিশম্ভপুর উপজেলার বাঘগাঁও গ্রামের হিরু মিয়ার ছেলে। গত ১২ দিন আগে সে ভৈরবে কাজের সন্ধানে এসে পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় কয়লার ঘাটে শ্রমিকের কাজ নেয়।
গতকাল রাতে ভৈরব বাসস্ট্যান্ড থেকে বাড়ি যাওয়ার সময় বাসে ওঠার আগে এই ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ রাতেই লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত পুলিশ হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে পারেনি।
প্রত্যক্ষদর্শী তার চাচা আজিজুল হক প্রতিদিনের বাংলাদেশ কে জানায়, আমি ও আমার ভাতিজা এহসানুল হক গত ১২ দিন আগে বাড়ি থেকে কাজের উদ্দেশ্যে ভৈরব আসি। কয়েকদিন কয়লা শ্রমিক হিসেবে ভৈরব ফেরিঘাটে কাজ করি। গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমরা দু’জন বাড়ি যাওয়ার জন্য ফেরিঘাট থেকে বাসস্ট্যান্ডে যাই।
এসময় এহসানুল একটি ফার্মেসিতে ট্যাবলেট কিনতে যাওয়ার সময় দুইজন লোক কোন কথা না বলেই তাকে রাস্তায় আটক করে মারধর করতে থাকে এবং পকেটের টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে।
ঘটনা দেখে আমি বাঁধা দিলে ছিনতাইকারীরা তাকে ছুরিআঘাত করে পালিয়ে যায়। এসময় সে রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরে। ঘটনাটি দেখেও রাস্তার লোকজন এগিয়ে আসেনি। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে হত্যার ঘটনায় ভৈরব ফেরিঘাটের ক্ষুব্ধ ও উত্তেজিত হয়ে কয়েকশ শ্রমিক আজ দুপুর আড়াইটায় মিছিল করে থানায় যায়। তারা তাদের সহকর্মী শ্রমিক এহসান হত্যার অপরাধীদের গ্রেফতার করে ফাঁসির দাবি জানায়। এসময় থানার ওসি মো. শাহিন শ্রমিকদেরকে আশ্বস্ত করে বলেন, ঘটনার পর থেকে পুলিশ হত্যাকারীদের ধরতে মাঠে নেমেছে। কিছুটা সময় দিতে হবে। শীঘ্রই অপরাধীরা পুলিশের হাতে ধরা পড়বে বলে শ্রমিকদের আশ্বস্ত করেন।
একথা বলার পর উত্তেজিত শ্রমিকরা থানা থেকে বিদায় হয়ে ঢাকা- সিলেট মহাসড়কে মিছিল করে। তাদের দাবি খুনিদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্য গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দিয়ে কাজকর্ম বন্ধ করার হুমকি দেন তারা।
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহিন প্রতিদিনের বাংলাদেশ কে জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে যায়। কারা তাকে কেন হত্যা করল তা তদন্ত করা হচ্ছে। অপরাধীদের ধরতে সিসিটিভি ক্যামেরা চেক করে শনাক্ত করার চেষ্টা করছে পুলিশ। মামলার পর তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।