তাহমিনা আক্তার,ঢাকা: গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, ড. রেজা কিবরিয়া বড় হয়েছেন বিদেশের মাটিতে। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশে একমাত্র তিনিই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছেন। বাংলাদেশের একমাত্র যোগ্য ব্যক্তি, শিক্ষিত ব্যক্তি তিনি। কাজেই সবাই তাকে নেতা বানিয়ে দেবেন।
গণঅধিকার পরিষদ ভাঙনের বিষয়ে বুধবার (২১ জুন) গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর। ড. রেজা কিবরিয়ার বিষয়ে অভিযোগ করে নুর বলেন, আমরা যেসব দলকে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এড়িয়ে চলি, সেসব দল ও সংগঠনের সঙ্গে গোপনে মিটিং করেন তিনি। বিএনপির সঙ্গে আমরা যুগপৎ আন্দোলনে মাঠে রয়েছি। অথচ বিএনপিকে ভাঙার যে প্রক্রিয়া, তার অংশ হিসেবে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দেয়া জনৈক মাসুদ করিম বা এনায়েত করিম ব্যাংকক ও কাঠমান্ডুতে বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করছেন। সেসব বৈঠকে রেজা কিবরিয়া নিয়মিত অংশ নিয়েছেন। এই এনায়েত করিম কিংবা মাসুদ করিমরা চাচ্ছেন বাংলাদেশে যেন সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে না ওঠে। এমনকি বিএনপিমনা ও ঘরানার শওকত মাহমুদদের দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছেন।
গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুর এসময় আরো বলেন, রেজা কিবরিয়া মনে করছেন, আগামীতে তিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন এবং তার নেতৃত্বাধীন দল কিংবা প্ল্যাফর্ম ক্ষমতায় যাবে। এ জন্য তিনি গণঅধিকার পরিষদের মনোনয়নও বিক্রি শুরু করে দিয়েছেন। এসব কারণে আমাদের মনে হয়েছে, এবার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
এদিকে গণঅধিকার পরিষদের নতুন সদস্য সচিব হিসেবে হাসান আল মামুনকে (মো. আল মামুন) ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব হিসেবে মনোনীত করেছেন ড. রেজা কিবরিয়া। এর আগে তিনি দলের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বও পালন করেছেন।মঙ্গলবার (২০ জুন) ড. রেজা কিবরিয়া স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশ দেন। এছাড়া মো. নুরুল হক (ভিপি নুর)-কে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে ড. রেজা কিবরিয়া।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমি ড. রেজা কিবরিয়া, আহ্বায়ক, গণঅধিকার পরিষদ সাংগঠনিক ক্ষমতাবলে পরবর্তী নির্বাহী সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সদস্য সচিব হিসেবে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ও অধিকার পরিষদের অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা হাসান আল মামুনকে (মো. আল মামুন) ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব হিসেবে মনোনীত করছি।
এতে আরও বলা হয়, গণঅধিকার পরিষদের গঠনতন্ত্র, ২১ দফা কর্মসূচী, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং মূলনীতি বিরোধী কাজ করা, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধান, মানি লন্ডারিং আইন ও সন্ত্রাসবিরোধী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠা, ইসরাইলসহ বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যোগাযোগ, অনৈতিক আর্থিক লেনদেন, গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে সভা আয়োজন ও অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনোনয়ন করা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক পোস্ট দিয়ে দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির দায়ে গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব মো. নুরুল হক (ভিপি নুর)-কে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হলো। একইসঙ্গে এই প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করায় কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটির ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খাঁনকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হলো। উভয়কে দলের দপ্তর বরাবর আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়া হলো।