মোঃ মামুনুর রশিদ (মিঠু),লালমনিরহাটঃ দেশে ফিরে এক বছরের ব্যবধানে নিঃস্ব লালমনিরহাটের প্রবাসী ময়েন উদ্দিন। স্ত্রী সন্তানদের রেখে দীর্ঘ ১০ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে উপার্জিত অর্থ ভাইদের কাছে খোয়া দিয়ে বর্তমানে নিঃস্ব এই রেমিটেন্স যোদ্ধা।
দুবাই ফেরত ময়েন উদ্দীনের বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের গন্ধমরুয়া গ্রামে। তিনি মৃতঃ আব্দুস সামাদ মন্ডলের ছেলে। সে গত ২৩/০৩/২০২১ইং তারিখে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর দপ্তরে দেওয়া একটি চিঠিতে উল্লেখ করেন। বিগত সময়ে তিনি থিয়েটার কর্মী ছিলেন। ২০১২ সালে ছেলেমেয়েদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ চিন্তা করে দুবাইয়ের আবুধাবিতে পাড়ি জমান। সেখানে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে দীর্ঘ ১০ বছরে যা উপার্জন করেন আংশিক পরিমাণ বাড়ির খরচ চালাতে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিতেন। সিংহভাগ টাকা রেখে দিতেন দুবাইতে থাকা তারই বড় ভাই আইন উদ্দিন এর কাছে।
একসময় ভিসা জটিলতা হলে দেশটির সরকার প্রবাসীদের ভিসা নতুন করে নবায়নের সুযোগ দিলে বড় ভাইয়ের নিকট টাকা চান ময়েন উদ্দিন। তখন বড় ভাই নানা টালবাহানা শুরু করেন বলে দাবি করেন ময়েন। লিখিত ওই চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, দুবাইয়ের মুদ্রার হিসেবে ২৬ হাজার দেরহাম বড় ভাই আইন উদ্দিনের নিকট পাবেন ছোট ভাই ময়েন উদ্দিন।
পরে বিদেশে থাকা অবস্থায়, দেশে অবস্থান করা আরেক ভাই আব্দুল মালেক (৬০) কে জমি ক্রয় বাবদ প্রদান করেন ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ভাই আব্দুল মালেক জমি দিয়েছন ঠিকি কিন্ত কাগজে কলমে বুঝে পাননি এখনো ময়েন।
দেশে ফেরার পর বড় ভাই ও তাদের সহযোগীদের দারা একাধিকবার মারপিটের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ ময়েন উদ্দিনের। শুধু তাই নয় তার বাড়ি লুটপাটপাট ও স্ত্রীকে মারধর করার ও অভিযোগ রয়েছে ভাইয়েরা সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে যা আদিতমারী থানায় ময়েনের স্ত্রী লাইলি বেগম লিখিত অভিযোগ করেও কোন সুরাহা পায়নি ময়েনের পরিবার।
এদিকে সহায়-সম্বল হারানো ময়েন উদ্দিন ও স্ত্রী লাইলী বেগম দুজনেই হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন। দীর্ঘদিন বিদেশে থেকেও কিছুই সাথে আনতে পারেননি ময়েন, একে টাকার শোক অপরদিকে ভাইদের নির্যাতন সইতে না পেরে মইনের স্ত্রী লাইলী বেগম মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন বলে দাবি করছেন ময়েন। আর চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে পারছেন না স্ত্রীর অর্থাভাবে। তাই ময়েন উদ্দিন গত ২৪/১১/২০২১ ইং তারিখে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত একটি আবেদন করেছেন স্ত্রীর চিকিৎসা সহায়তার জন্য।
এদিকে মারপিট ও বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওই অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই স্বপনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন আমার বদলি হয়েছে, বিষয়টি এখন আমার কাছে নেই।
বিদেশে অবস্থানরত অভিযুক্ত ভাই আইনুদ্দিনের হোয়াটস এ্যাপে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে, তিনি ফোন ধরেননি।
দেশে অবস্থানকারী আরেক ভাই অভিযুক্ত মালেকের মুঠোফোনে কথা বলতে চাইলে তার মোবাইল ফোন সুইচ অফ পাওয়া যায়।
আর এবিষয়ে দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান নান্নু বলেন, বিষয়টি নিয়ে বসে মীমাংসা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি।