মোহাম্মদ ইব্রাহিম হোসেন, নাটোর জেলা প্রতিনিধি।।
নাটোর জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার কামারশালা গুলো এখন মুসলমানদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ধর্মীয় উৎসব ঈদ উল আযহা বা কুরবানীর ঈদ কে সামনে রেখে হাতুড়ি আর লোহার টুং টাং শব্দে মুখরিত। টানছে হাপর, পুড়ছে কয়লা, জ্বলছে লোহা। হাতুড়ির আঘাতে তৈরী হচ্ছে দৈনন্দিন জীবনে কাজের উপযুক্ত দ্রব্য সামগ্রী হাসুয়া, কাছি, দা, বটি, ছুরি, চাপাতিসহ ধারালো সব যন্ত্রপাতি। নাটোর জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার কামারশালা গুলো এখন মুসলমানদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ধর্মীয় উৎসব ঈদ উল আযহা বা কুরবানীর ঈদ কে সামনে রেখে হাতুড়ি আর লোহার টুং টাং শব্দে মুখরিত। যেহেতু কুরবানির পশুর মাংস কাটার জন্য চাই ধারালো দাঁ,বটি,চাপাতি ও ছুরি। তাই কয়লার চুলায় দগদগে আগুনে গরম লোহার পিটাপিটিতে টুং টাং শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে নাটোরের নলডাঙ্গার কামার শালাগুলো। আর সামনে আগুনের শিখায় তাপ দেয়া হাতুড়ি পেটানোর টুং টাং শব্দে তৈরি হচ্ছে দা-বটি, চাপাতি ও ছুরি। তাই যেন দম ফেলার সময় নেই কামারদের। নাওয়া-খাওয়া ভুলে দিন রাত কাজ করছেন কামাররা। কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছেন তারা। সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও কুরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে কয়েকগুণ ব্যস্ততা বেড়ে যায় কামারদের। কয়েকজন কামারের সাথে আলাপ করে জানা যায়, রকম ভেদে পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ১০০ থেকে ২০০ টাকা, দা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, বটি ২৫০ -৩০০, পশু জবাইয়ের ছুরি ৩০০ থেকে ৮০০ টাকা, চাপাতি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কুরবানির ঈদ উপলক্ষে কয়লা ও শ্রমিকের মূল্য বেড়ে গিয়েছে। আগে প্রতি বস্তা কয়লার দাম ছিলো ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। সেই কয়লা এখন আমাদের ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তাই আমরা চাপাতি, ছুরি ও দায়ের দাম একটু বেশি নিচ্ছি। তা না হলে আমাদের লাভ হবে না। সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, আসন্ন কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে অনেক ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। পশু জবাইয়ের সরঞ্জামাদি কিনতেও লোকজন ভিড় করছেন তাদের দোকানে। আগে যে সব দোকানে দুজন করে শ্রমিক কাজ করতো, এখন সে সব দোকানে ৩-৪ জন করে শ্রমিক কাজ করছেন। উপজেলার চৈউখালি গ্রামের কামার দোকানদার সাইদুল প্রাং (৬৪) অভিযোগ করেন, কুরবানির ঈদ উপলক্ষে কয়লা ও র্যাত দাম ও শ্রমিকের দাম বেড়ে গেছে। অপরদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ ঈদ উপলক্ষে দাঁ, চাপাতি ও ছুরির দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলার পূর্ব মাধনগর এলাকার দিপ্ত কুমার নির্মল মন্ডল বলেন, সারা বছর কাজ কম থাকে। কুরবানির ঈদ এলে আমাদের কাজ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। ছুরি শান দেওয়ার জন্য ৫০ টাকা থেকে শুরু করে কাজের গুণাগুণের উপর ভিত্তি করে ১০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে অপর কামার বৈদ্যনাথ বলেন, কুরবানির ঈদ উপলক্ষে আমাদের বেচা কেনা দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। তবে ঈদের দুই দিন আগে থেকে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা বেচাকেনা হবে। তখন আমাদের খাওয়ার সময়ও থাকে না। উপজেলার বাঁশভাগ গ্রামের দোকানি আত্তার হোসেন বলেন, ঈদকে সামনে রেখে কাজের চাপ বেশি। কাজের চাপে কখন খাওয়ার সময় চলে যাচ্ছে আমরা টেরও পাই না। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে আমাদের বিক্রি তত বাড়ছে।