ঢাকাসোমবার , ৭ মার্চ ২০২২
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নিজের গড়া নিয়মে মসজিদও রেজিস্ট্রি করলেন সাব-রেজিস্ট্রার!

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
মার্চ ৭, ২০২২ ১:১৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আশরাফুল হক, লালমনিরহাটঃ মসজিদ শ্রেণির জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা সাব রেজিস্টার এইচএম মিরাজ সৌরভের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের রসূলপাড়া গ্রামে একটি মসজিদ ছিল। যার কারনে মাঠ জরিপে ওই জমির শ্রেণীতে মসজিদ হিসেবে চিহ্নত করে রেকর্ডভুক্ত করেন সেটেলমেন্ট বিভাগ। মহিষখোচা মৌজার খতিয়ান নং -২৩২; জেএল নং ১১৫; এসএ দাগ নং -৩১৮০ ও বিআরএস নং ৬০৭৩ দাগের জমির শ্রেণীতে জমির শ্রেণী দেয়া আছে মসজিদ।

ওই এলাকার মৃত একাব্বর আলীর ছেলে নুর ইসলাম গংরা পৈত্রিক সুত্রে পাওয়ার দাবি করে ১৮.৫৪ শতক বিক্রি করেন। যা ক্রয় করেন একই এলাকার আব্দুল হামিদ মাষ্টারের ছেলে শাহজাহান আলী বাদশা ও ইউনুস গংরা। ভুমি ক্রয় বিক্রয় নিয়ম অনুযায়ী ৯০ সালের প্রিন্ট পর্চা ও ভুমি উন্নয়ন কর পরিশোধ সাপেক্ষে জমি রেজিস্ট্রি করা সম্ভব। ভুমি উন্নয়ন কর ব্যাতিত কোন ভাবে জমি রেজিস্ট্রির কোন নিয়ম নেই।

সরকারী নিয়মানুযায়ী মসজিদসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ভুমি উন্নয়ন কর গ্রহনের কোন সুযোগ নেই। তাই এসব বিক্রি যোগ্য নয়। সরকারী বিধি কাগজ কলমে থাকলেও আদিতমারী উপজেলা সাব রেজিস্টার অফিস চলে সাব রেজিস্টার এইচএম মিরাজ সৌরভের নিয়মে। নিজের গড়া নিয়মেই মসজিদের ও শ্রেণীর ১৮.৫৪ শতাংশ জমি নিজ অফিসে রেজিস্ট্রি সম্পাদন করেন গত ২০ ফেব্রুয়ারী। যার দলিল নং ১১১৩। ভুমি উন্নয়ন করের কোন প্রমানপত্রও নেই সেই দলিলে। বিষয়টি জানাজানি হলে পুরো উপজেলায় আলোচনার ঝড় উঠে। অভিযোগ রয়েছে, মোটা অংকে উৎকোচ দিলে জমি রেজিস্ট্রিতে তেমন কোন কাগজপত্রও লাগে না এ সাব রেজিস্ট্রি অফিসে। তাই এক শ্রেণীর অসাধু দলিল লেখক কাগজপত্র ঘষা মাঝা করে ফটোকপি দিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করে নিচ্ছেন।

এমনই ঘটনা ঘটেছে মসজিদ রেজিস্ট্রির ক্ষেত্রে। এ খতিয়ানের অপর দাগে ভুমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করে। সেই কাগজে অবিকল নকল করে অপর দাগ লিখে ফটোকপি সংযুক্ত করে সম্পাদন হচ্ছে দলিল। যাতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারন ক্রেতা। আর রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। মসজিদ রেজিস্ট্রির দলিলটি লিখেন দলিল লেখক সাইফুল ইসলাম মন্টু। যিনি বিডিআর বিদ্রোহের সময় চাকুরীর চ্যুত হয়ে বর্তমানে দলিল লেখক হিসেবে গত ২০১৩ সালে দলিল লেখকের সনদ গ্রহন করেন। যার লাইসেন্স নং ১২/২০১৩। অভিযোগ রয়েছে, দলিল লেখক সাইফুল ইসলাম ভুমি উন্নয়ন করের রশিদ ফটোকপি করে মসজিদের দাগও কলমে লিখে দিয়ে দলিলটি প্রস্তুত করেন। বর্তমান সাব রেজিস্টারের সাথে সখ্যতা থাকায় ইতিপুর্বেও এমন কাজ করেও অধরাই রয়েছেন এ দলিল লেখক।

শুধু মসজিদই নয়। গত বছরের ১৯ অক্টোর সম্পাদিত ৪৯০২ ও ৪৯০৩ নং দলিল দুইটিরও ভুমি উন্নয়ন কর আজও প্রদান করা হয়নি বলে নিশ্চিত করেন মহিষখোচা ইউনিয়ন সহকারী ভুমি কর্মকর্তা। এভাবে ভুমি উন্নয়ন করের রশিদ ছাড়াই জমি রেজিস্ট্রি করেন সাব রেজিস্টার এইচএম মিরাজ সৌরভ। যাতে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

মহিষখোচা ইউনিয়ন ভুমি অফিসের সহকারী ভুমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) রেজাউল আলম বলেন, মসজিদ শ্রেণীর কোন ভুমি উন্নয়ন কর গ্রহন করা হয় না। এ খতিয়ানের ৬০৭৫ দাগের ডাঙ্গার ভুমি উন্নয়ন কর গ্রহন করা হয়েছে। ৬০৭৩ নং দাগে মসজিদ থাকায় গ্রহন করা হয়নি। সাব রেজিস্টার অফিসের প্রতিনিধি এসে রশিদ বহি দেখেও গেছেন। এরপরও মসজিদ রেজিস্ট্রি হওয়ার কথা নয়।

সম্পাদিত দলিলটি হাতে নিয়ে আদিতমারী উপজেলা সাব রেজিস্টার এইচএম মিরাজ সৌরভ বলেন, মসজিদ শ্রেণী ও ভুমি উন্নয়ন কর ব্যাতিত জমি রেজিস্ট্রি সম্পাদনের কোন নিয়ম নেই। দলিল লেখক মসজিদের স্থলে ডাঙ্গা দেখিয়ে ভুয়া কাগজ দাখিল করে এমনটা করতে পারে। প্রয়োজনে দলিলটি ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। বিষয়টি তদন্ত করে দলিল লেখকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন