গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার পলাশবাড়িতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ম্যাসেনজারে বস্তির মেয়ে বলে কটাক্ষ করায় মাসতুরা রহমান মেধা(১৪) নামে এক স্কুল ছাত্রীকে বেড়ধক পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করেছে মোত্তালিব সরকার বকুল নামে এক বিএনপি নেতা। পরে ওই স্কুল ছাত্রী অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করে পলাশবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে তার স্বজন ও সহপাঠিরা।
মঙ্গলবার(৮ মার্চ) রাতে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর পিতা মিজানুর রহমান বাদী হয়ে পলাশবাড়ি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। এর আগে ওই দিন সন্ধ্যার দিকে পলাশবাড়ি পৌরসভার প্রফেসর পাড়ায় দিপঙ্কর নামে এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার ওই শিক্ষার্থী গ্রীনফিল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্রী এবংরনির্যাতনকারী মোত্তালিব সরকার ওরফে বকুল পলাশবাড়ি উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সাংগঠনিক সম্পাদক।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্কুল ছাত্রী মাসতুরা রহমান মেধা, মোহনা আক্তার নামে এক কলেজ ছাত্রীর ফেসবুক ম্যাসেনজারে বস্তির মেয়ে বলে কটাক্ষ করে। এতেই ক্ষিপ্ত হয় ওই কলেজ ছাত্রী। মঙ্গলবার বিকেলে প্রাইভেট পড়ার জন্য মেধা পলাশবাড়ি পৌরসভার দিপঙ্কর নামে এক শিক্ষকের কাছে গেলে মোহনা সেখানে উপস্থিত হয়ে প্রাইভেট রুম থেকে বের হওয়ার জন্য বলে। মেধা কথা না শোনায় প্রাইভেট রুম থেকে টানা হেচরা করে বের অতর্কিতভাবে এলোপাথারী চরথাপ্পর মারে মোহনা। এ সময় প্রাইভেট শিক্ষক ও তার সহপাঠিরা দুজনকে থামিয়ে দিলেও মোহনা তার বাবা বিএনপি নেতা মোত্তালিব সরকার বকুলকে ফোন করে তাকে মারধর করা হয়েছে বলে জানায়। পরে মোহনার পিতা মোত্তালিব সরকার বকুল ও তার স্ত্রী শিমুলী বেগম প্রাইভেট স্থলে এসে মেধাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করে। এবং প্রচন্ডভাবে মাথায় আঘাত করে। মারধরের এক পর্যায়ে মেধা অজ্ঞান হয়ে পড়লে গুরুত্বর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে তার সহপাঠি ও স্বজনরা।
মেধার সহপাঠীরা জানান, মেধাকে নির্যাতন করা হয়েছে। তার পিঠে, পায়ে ও মাথায় গুরুতর আঘাত করা হয়েছে। অত্যাচারের শিকার হয়ে মেধা বেশ কয়েকবার বমিও করেছে।
পলাশবাড়ি গ্রীনফিল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল মাহাফুজ সিদ্দিক টিপু বলেন, মেধা এখন হাসপাতালে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে আছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানান তিনি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা বকুল বলেন, আমার মেয়ে মোহনা আক্তার মোবাইল ফোনে তাকে মারধর করছে জানালে আমি এবং আমার স্ত্রী ঘটনাস্থলে যাই এবং সেখানে আমার মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে আমার স্ত্রী মেধা নামের মেয়েটিকে কয়েকটি থাপ্পড় মারে। পরে আমার মেয়েকে নিয়ে আমি ও আমার স্ত্রী বাসায় চলে আসি। এ ঘটনায় আমাকে দায়ী করে থানায় অভিযোগ করাটা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।
এ ব্যাপারে পলাশবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা জানান, এ ঘটনার অভিযোগ হাতে পেয়েছি, তদন্ত চলছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রিপন আকন্দ/গাইবান্ধা