তাহমিনা আক্তার, ঢাকা ব্যুরো।। একসময় বলতে শোনা যেতো, রাতে মশা, দিনে মাছি, এই নিয়ে ব্যস্ত আছি। আস্তে আস্তে এ প্রবাদটি মিথ্যায় রূপ নিচ্ছে। কারণ এখন দিনে ও রাতে সবসময়ই মশা ও মাছির ভনভনানী শুনতে হয়। মশা নিয়ে এখন অতিষ্ঠ পুরো নগরবাসি।
এ যেন মশা-মাছির রাজত্ব চলছে প্রতিটি এলাকাতেই। মশক নিধনে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে এলেও কোন কিছুতেই যেন থামানো যাচ্ছে না মশার উৎপাত।
রাজধানীর প্রতিটি এলাকার বাসা বাড়িতেই সন্ধ্যা নামতে না নামতেই আক্রমণ করে বসে মশার বাহিনী। মশা নিধনে সংশ্লিষ্টরা বারবারই ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিচ্ছেন।
নগরবাসী দায়ী করছেন সিটি করপোরেশনকে। অনেকেই বলছেন মশা মারতে যে ক্যামিকেল ব্যবহার করা হচ্ছে তাতে ভেজাল থাকায় মশা মারা সম্ভব হচ্ছে না। তাই এখন নগরবাসীর মশা প্রতিরোধে একমাত্র ভরসা মশারি।
সরেজমিনে রাজধানির জিরো পয়েন্ট এলাকার পীর ইয়ামেনী মার্কেটের নিচ তলায় গিয়ে দেখা যায়, শতাধিক কারিগর দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন মশারি তৈরিতে।
এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা হলে কারিগর আফজাল মিয়া জানান, শহরজুরে মশার উৎপাত বেড়ে যাওয়ায় মার্কেটগুলোতে মশারির চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। চাহিদা মেটাতে দিনরাত মশারি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে।
রাজধানীর গুলিস্তান, নিউমার্কেট, গুলশানসহ বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায় প্রায় ৮-১০ ধরনের মশারি রয়েছে। সবচেয়ে বেশি চাহিদা ম্যাজিক মশারি। মশারির পর্যাপ্ত চাহিদা থাকলেও দাম অনেকটাই কম।
মশারির পাইকারি বাজারে ছোট বাচ্চাদের জন্য প্রতিটি সিঙ্গেল মশারি ১১০ টাকা থেকে ১২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। সিঙ্গেল মশারি বড়দের জন্য পাইকারি দর ১৫০-১৮০ টাকা। ৪-৫ হাত মশারির দাম ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা।
রাজধানীর সানারপাড় থেকে মশারি কিনতে আসা সবুজ জানায় সানাড়পাড়, ডেমরা, মাতুয়াইল, এলাকায় মশার যন্ত্রণায় ঘরে বাইরে থাকা মুশকিল। দিনের বেলায়ও মশরি টানিয়ে থাকতে হয়। কিন্তু মশা মশারিও মানে না। ফাঁক পেলেই মশারির ভিতর ঢুকে আক্রমণ চালায়।
এছাড়া উত্তরা, গুলশান, বসুন্ধরা, খিলগাঁও, বাসাবো এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে মশার রাজত্ব। কথা বলে জানা গেছে তারাও মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ। মশার উপদ্রবের হাত থেকে রক্ষা পেতে সরকারে হস্তক্ষেপ আশা করেন তারা।