নিজস্ব প্রতিবেদক।। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে জমির দখল ঠেকাতে আদালতে মামলা করে আসামিদের ভয়ে ঘর ছাড়া ঝর্ণা বেগম (৫০) নামে এক নারী। আসামিরা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিবাদমান জমিতে ভবন নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর।
ভুক্তভোগী ঝর্ণা বেগম উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া গ্রামের মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহরাফ হোসেনের স্ত্রী।
জানা গেছে, উপজেলার ৯০ নং ঘোনাপাড়া মৌজার বিআরএস ২৬৮, ৫৩৫, ২৬৯নং খতিয়ানের বিআরএস ২৬৮, ৫৩৫, ২৬৯ দাগের ৩৪ শতাংশ জমি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। জমির দাবিদার ঝর্ণা বেগম গত ১ মার্চ গোপালগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশি সম্পত্তি নিয়ে একটি মামলা করেন।
মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই সম্পত্তিতে উভয় পক্ষের প্রবেশ, স্থাপনা নির্মাণসহ শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যে কাশিয়ানী থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু আদালত নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিপক্ষ বাচ্চু মোল্যা লোকজন নিয়ে ভবন নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
ভুক্তভোগী ওই নারী অভিযোগ করে বলেন, আমার সম্পত্তিতে জোর করে প্রতিপক্ষ বাচ্চু মোল্যা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন ও আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিলে আমি আদালতে একটি মামলা করি। মামলায় ওই সম্পত্তিতে আদালত স্থিতাবস্থা জারি করেন। মামলার পর থেকে বাদী ও বাদীর পরিবার আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ভয়ে আমি দুই সপ্তাহ ধরে বাড়িতে থাকতে পারছি না, পালিয়ে বেড়াচ্ছি।
তিনি বলেন, আমার স্বামী বেঁচে নেই। আমার ছেলেরা চাকরি করে। আমি বাড়িতে একা থাকি। এ সুযোগে আমার জমি দখল করার জন্যে দীর্ঘদিন ধরে আমার ওপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে আসছে। এর আগেও তারা আমাকে একাধিকবার মারধর করেছে। আমি ভয়ে আমার আত্মীয় বাড়িতে এসে আশ্রয় নিয়েছি, বাড়িতে ফিরতে পারছি না।
বাচ্চু মোল্যার ছেলে জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি হুমকি-ধমকির কথা অস্বীকার করে বলেন, সিমেন্ট নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল, তাই কিছুটা কাজ করেছিলাম। পুলিশ এসে বন্ধ করে দেয়ার পর আর কাজ করেনি। বিষয়টি এলাকাবাসীকে নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সহকারি কমিশনার (ভূমি) আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি অবগত হয়েছি এবং ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাশিয়ানী থানার এএসআই পলক কুমার বারুরী বলেন, বিবাদমান সম্পত্তিতে উভয় পক্ষকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যে বলা হয়েছে। তবে কাজ করছিল খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।
পুনরায় কাজ করলে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া বাদীর আইনগত অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব।