আশুগঞ্জ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি।। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ বাজারের হাজীপাড়ায় একটি আবাসিক ভবনের ছাদ থেকে ইয়াছিন আরাফাত (২০) নামের এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলাসদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ইয়াছির জেলার নবীনগর উপজেলার ঝিনোদপুর গ্রামের মো. আব্দুর রহমানের ছেলে। লাশ উদ্ধারকালে তার পা ছাদের ফ্লোরে লেগে ছিল। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আব্দুর রহমান খাদ্য বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী। সেই সুবাদে তার পরিবার ১৫ বছর ধরে আশুগঞ্জে বাস করছে। ৫ বছর ধরে তারা হাজীপাড়ায় জনৈক কালাম মিয়ার বাসায় ভাড়া থাকেন।
স্বজনরা ও পুলিশ জানায়, ইয়াছির বিদেশে যাওয়ার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তার এক আত্মীয়ের ওয়ার্কসপে কাজ শিখছিলেন। প্রতি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আশুগঞ্জের বাসায় আসতেন। গত বৃহস্পতিবারও বাসায় আসেন। এরপর শুক্রবার রাতে বাসায় না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা তার মোবাইলে ফোন দিয়ে বন্ধ পান। রাতে তার বড় ভাই তুষার ইয়াছিরের ফেসবুক আইডিতে ঢুকে জানতে পারেন যে, ইয়াছির তার কয়েক বন্ধুকে বাসার ছাদে আসতে বলেছেন। সকালে আবার তার মোবাইলে ফোন দিলেও কেউ কল রিসিভ করেনি। পরে ছাদে খুঁজতে গিয়ে ছাদের দেয়ালের সঙ্গে লোহার তার গলায় পেঁচানো তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। এরপর পুলিশে খবর দিলে তারা এসে লাশ উদ্ধার করে।
ইয়াছিরের বাবা আব্দুর রহমান ও বড় ভাই বিলু মিয়া বলেন, আশুগঞ্জে ইয়াছির মূলত আলভি, রায়হান, প্রান্ত ও একান্ত নামের বন্ধুদের সঙ্গেই বেশি সময় কাটাতেন। কিছু দিন আগে ইয়াছিনকে আলভিসহ কয়েকজন মারধর করেছিল। তারা-ই ইয়াছিরকে হত্যা করেছে দাবি করে এ ঘটনায় মামলা করবেন বলেও জানান তারা।
এদিকে খবর পেয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সরাইল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আলভি ও একান্ত নামে ইয়াছিরের দুই বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
আশুগঞ্জ থানার ওসি মো. জাবেদ মাহমুদ প্রতিদিনের বাংলাদেশ কে বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলাসদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে কিছু আলামত জব্দ ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইয়াছিরের দুই বন্ধুকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রইছ উদ্দিন বলেন, পুলিশ ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে। ময়নাতদন্তের রির্পোট হাতে পেলে ও তদন্তের পর ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।