আনিসুর রহমান,স্টাফ রিপোর্টার- কুড়িগ্রামের রাজারহাটে এক প্রতারক ইরানী চক্র এনজিও চাকুরী দেয়ার নাম করে প্রতারণা করে আসছে। তাদের ফাঁদে পরে প্রতারণার শীকার অনেক পরিবার। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ভোক্তভোগীরা।
সম্প্রতি (৩ মে) অগ্রযাত্রা সমাজ উন্নয়ন সংস্হা ২৫ হাজার জনবল চেয়ে ভূয়া একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিষয়টি নিয়ে স্হানীয় সাংবাদিকগণ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ করে। এতেই টনক নড়ে প্রতারক চক্রের। পরে গাঁ বাঁচাতে বিভিন্ন সেক্টরে তদবীর চালাচ্ছে সংস্হাটি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজারহাট উপজেলা সদর ইউনিয়নের হরিশ্বতালুক গ্রামের আব্দুল খালেক। পূর্বে সেনাবাহিনীর সদস্য পদে চাকুরী করতেন। চাকুরীতে থাকার সুবাধে শান্তি রক্ষা মিশনে ইরানে কিছুদিন কর্মরত ছিলেন- সেই থেকে নামের সঙ্গে যোগ করেন ইরানী পদবী। চাকুরী থেকে অবসর গিয়ে নামের পুর্বে যোগ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা পদবী। ওই ইরানী’র ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার সরকারি গেজেট ও ভারতীয় লাল বার্তা তালিকায় নাম নেই তার। কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধা পদবী ব্যবহার করে গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে তার অগ্রযাত্রার সংস্থার ওয়েসাইড (আসুসবিডি) এবং ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট ২০৫০৪১০০১০০০৭০৯০৮ নামে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ করে বিভিন্ন প্রতারক চক্রের মাধ্যমে তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি টাকা। বর্তমানে ইরানী প্রতারকের মুলহোতা এবং গড়ে তুলেছে শক্তিশালী প্রতারক চক্র। সেই প্রতারক চক্রের মুল সিন্ডিকেটের কাজ হচ্ছে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়া। অনেকেই চাকুরীর আশায় এ ইরানি চক্রের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়েছে। সম্প্রতি অগ্রযাত্রা সমাজ উন্নয়ন সংস্হা যার রেজি নং- ৬৮৮। এনজিও বূরো রেজি নং ২৭৪৭। অগ্রযাত্রা ; ইরানীসহ প্রতারক চক্রটি।পরে চক্রটি বাঁচার জন্য অনলাইনে ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদ জানায়। এ ছাড়া ২০১৩ সালে বুদ্ধি প্রতিবন্ধি ও অটিস্টিক বিদ্যালয় ও হরিশ্বর তালুক অটিজম প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় নির্মিত করে। ওই প্রতিষ্ঠানে চাকুরী দেয়ার কথা বলে শতাধিক লোকজনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার একাধিক তথ্য পাওয়া গেছে।
অগ্রযাত্রা উন্নয়ন সংস্হার চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক ইরানী মুঠোফোনে বলেন, আমার বড় ছেলে সোহাগ আপনার সঙ্গে দেখা করবে এবং ঘটনাটি আমার বড় ছেলে সব জানাবে। এ বিষয়ে ইরানীর বড় ছেলে সোহাগ মিয়াকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিয়ে দেখা করে এ প্রতিবেদকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এছাড়া ইরানী সত্যতা স্বীকার করে বলেন, একটি প্রতিষ্ঠান কখনো একাই হয়না। অনেকেই সংশ্লিষ্ট থাকেন এবং অনেকেই টাকা দিয়ে সহযোগিতা করে। আর অগ্রযাত্রার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিষয়টি আমি জানি না। কে বা কারা এটি করছে।
শিক্ষক হারুন মিয়া জানান, ওই ইরানীকে চাকুরীর জন্য আমি এবং আমার ভগ্নিপতি ৩ লাখ টাকা দিই। এখন টাকা ফেরৎ চাইলে তিনি বিভিন্ন টালবাহনা করে আসছে।
রাজারহাট উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রজব আলী বলেন, ইরানী সাহেব কিসের মুক্তিযোদ্ধা? তিনি তো মুক্তিযোদ্ধা নন তার কোন কাগজ নেই। মুক্তিযোদ্ধা পদবী ব্যবহার করে সে মানুষের সাথে বিভিন্ন ধরণের প্রতারণা করতেছে। তাকে আইনের আওতায় আনা হোক।
রাজারহাট উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন অগ্রযাত্রা সংস্থার সাথে কোন রকম যোগাযোগ নাই। এ সংস্থার কমিটির মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয় অবগত নন বলে জানান
এ বিষয়ে রাজারহাট থানার ওসি রাজু সরকার বলেন,প্রতারনার অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।