রাকিব হোসেন, ফেনী: ফেনী সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামে সদ্যবিবাহিত কফিল উদ্দিন নামে এক প্রবাসীর মরদেহ তার শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।সোমবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে ওই গ্রামের ভূঞা বাড়ি থেকে কফিলের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে কফিলের বাবা সামছুল হক বাদী হয়ে পুত্রবধূ ও শ্বশুর-শাশুড়ির নামে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেছেন। এজহার দাখিলের পর কফিলের শ্বশুর আবুল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
কফিলের শ্বশুর আবুল হাসেমের দাবি এটি আত্মহত্যা। তবে নিহতের বাবা সামছুল হক ফরায়েজী ঘটনাটিকে পরিকল্পিত হত্যা বলে দাবি করেছেন।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মাসখানেক আগে দুই মাসের ছুটিতে কঙ্গো থেকে বাড়িতে আসেন কফিল উদ্দিন। ১ এপ্রিল ফেনী সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নের পূর্ব কচুয়া গ্রামের আবুল হাসেমের মেয়ে সাবরিনা আক্তার সুবর্ণার সঙ্গে তার বিয়ে (আকদ) হয়। বিয়ের পর থেকে স্ত্রী তার বাবার বাড়িতেই থাকতেন। রোজার ঈদের পর স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের বাড়িতে উঠিয়ে নেওয়ার কথা ছিল কফিলের।
শুক্রবার বিকেলে কপিল তার শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যান। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান জিনিসপত্র দিতে চাপ দেন। এই চাপ দেওয়ার বিষয়টি কফিল সোমবার বেলা ১১টার দিকে তার বাবাকে ফোন করে জানান। পরে বেলা দুইটার দিকে শ্বশুরবাড়ির একটি কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে কফিলকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
কফিলের বাবা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, ঘরের মেঝেতে ছেলের মরদেহ শোয়ানো অবস্থায় রাখা আছে। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
স্ত্রী সাবরিনা আক্তার সুবর্ণা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘুম থেকে উঠে কফিল তার সঙ্গে কথা বলেন। বেলা ১১টার দিকে তার শ্বশুরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কফিলের শেষ কথা হয়। এরপরই অনেকক্ষণ কক্ষের দরজা বন্ধ থাকায় আশপাশের লোকজন এনে ধাক্কাধাক্কি করে দরজা খুলে কফিলের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পাই।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানার উপপরিদর্শক মো. জালাল উদ্দিন-২ জানান, খবর পেয়ে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট ও তদন্তে বেরিয়ে আসবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা।
ফেনী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন প্রতিদিনের বাংলাদেশ কে বলেন, মোটবীতে প্রবাসীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আবুল হোসেন নামের এজহারনামীয় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।