প্রতিদিনের বাংলাদেশ।। রাজধানীতে হেফাজত ইসলামের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালে কোনও এলাকায় চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে আবার কোথাও কঠোর হরতাল পালিত হচ্ছে। তবে বেশিরভাগ এলাকায় যানবাহন স্বাভাবিক থাকলেও রাস্তায় ব্যক্তিগত ও গণপরিবহণ সংখ্যা তুলনামূলক কম।
আজ রোববার (২৮ মার্চ) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান, পল্টন, শাহবাগ, নীলক্ষেত, এলিফ্যান্ট রোড, ধানমন্ডি, শুক্রাবাদ, শ্যামলী, কল্যাণপুর ও গাবতলি এলাকায় একই চিত্র চোখে দেখা যায়।
তবে আসাদগেট থেকে মোহাম্মদপুরের তিনরাস্তা মোড় পর্যন্ত রাস্তায় একেবারেই যান চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে না এমনকি রিকশাও চলতে দিচ্ছেন না মাদরাসা শিক্ষার্থীরা। চলছে কড়াকড়ি হরতাল। অফিসমুখী মানুষকে পায়ে হেঁটেই চলতে দেখা গেছে। দুই-একটি যান চলতে গেলে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে সেগুলোকে।
সারা দেশে আজ রোববার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে হেফাজতে ইসলাম। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের বিরুদ্ধে ‘প্রতিবাদী মুসল্লিদের ওপর হামলা ও হত্যার’ প্রতিবাদে তারা এই হরতালের ডাক দেয়।
হেফাজত নেতারা আজকের হরতাল সফল করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সংগঠনের মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদি হরতালে সংঘর্ষের কোনো ঘটনা যেন না হয়, সে জন্য সরকার ও প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন। হেফাজতের আজকের হরতাল কর্মসূচিতে সমর্থন দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
গাবতলী এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের বক্সে দায়িত্বরত সার্জেন্ট আসাদুজ্জামান বলেন, তিনি সকাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর জানামতে, এই এলাকায় কোনো পিকেটিংয়ের ঘটনা ঘটেনি। ঢাকার বাইরে বাস যাচ্ছে। বাইরে থেকেও বাস আসছে।
তবে গুলিস্তানে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ মইনুল বলেন, হরতালের জন্য গাড়ি চলাচল কিছুটা কম। তবে গাড়ি চলছে। অন্যান্য কর্মদিবসে গাড়ির চাপ যেমন থাকে, আজ তার থেকে কিছুটা কম।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সামসুল আলম বলেন, যানবাহন অন্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম। সাইনবোর্ড থেকে গুলিস্তান এসেছি। তবে এখন গুলিস্তান থেকে মালিবাগে দিকে যাওয়ার গাড়ি পাচ্ছি না। অন্যান্য দিন একের পর এক গাড়ি আসলেও আজ গাড়ির সংখ্যা অনেকটাই কম।
এদিকে হরতালে ঢাকার কোথাও এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অপ্রীতিকর কোনো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।
জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যারা এই হরতালের নামে বিক্ষোভ, মিছিল সমাবেশের নামে নাশকতার চেষ্টা করবে, জ্বালাও-পোড়াও করবে তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে। কেউ যদি যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে, জানমালের ক্ষতির চেষ্টা করে, থানায় হামলা বা আগুন দেয়ার চেষ্টা করে তবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। মনে রাখতে হবে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।’
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘চলমান পরিস্থিতিতে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে র্যাব সদর দফতর সব ব্যাটালিয়নকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি র্যাব সাইবার পেট্রোলিংয়ের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে। কেউ হরতালের নামে সহিংসতা করার চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’