ঢাকারবিবার , ২ এপ্রিল ২০২৩
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কিভাবে বুঝবেন আপনার কাছের কেউ আত্মহত্যার ঝুঁকিতে?

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
এপ্রিল ২, ২০২৩ ৭:০৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রাশেদুল ইসলাম রাশেদ।। সংবাদমাধ্যমে প্রায় রোজই আসে মানুষের আত্মহত্যার মর্মান্তিক খবর। করোনাকালে সে হার আরও বেড়েছে। আত্মহত্যাকারী মানুষের মধ্যে অল্প বয়সীদের সংখ্যাও কম নয়। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, আত্মহননের পথ বেছে নেওয়া মানুষের মধ্যে আগেই কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। কি সেই লক্ষণ?
Add 99998
নিজেকেই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে মানুষ। সেই ‘নিজে’কে শেষ করার মতো নির্মম কাজটিও কিন্তু কম মানুষ করছেন না!নিজেকেই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে মানুষ। সেই ‘নিজে’কে শেষ করার মতো নির্মম কাজটিও কিন্তু কম মানুষ করছেন না!
নিজেকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে মানুষ। সেই ‘নিজে’কে শেষ করার মতো নির্মম কাজটিও কিন্তু কম মানুষ করছেন না! প্রায় প্রতি সপ্তাহেই পত্রিকা বা টেলিভিশনে সংবাদ হয়ে আসে কারও না কারও আত্মহত্যার মর্মান্তিক সংবাদ। বিশেষ করে অল্প বয়সীদের মধ্যে এই প্রবণতা বেড়েই চলেছে।

যাঁরা আত্মহত্যা করেছেন, তাঁদের প্রিয়জনদের মনে সহজাত প্রশ্ন জাগে, কোনো লক্ষণ দেখে কি পারতাম তাঁর আত্মহননের পথ রোধ করতে, কেন সে এমন করল, কী ভেবেছিল আত্মহত্যা করার আগে…। এই পরিতাপ রয়ে যায় সারা জীবন।

কেন আত্মহত্যা?
গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা আত্মহত্যা করেন, তাঁদের একটি বড় অংশ (৯০ শতাংশ) আত্মহত্যার সময় কোনো না কোনো মানসিক রোগে ভোগেন। বিষণ্নতা তার মধ্যে অন্যতম। বিষণ্নতায় ভোগা রোগীদের ৪ শতাংশ আত্মহত্যা করেন। অন্য এক গবেষণা অনুযায়ী, বিষণ্নতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৬০ শতাংশেরই আত্মহত্যার ইচ্ছা জাগে আর তাঁদের মধ্যে আত্মহত্যা করে ফেলতে পারেন ১৫ শতাংশ রোগী।

আপনার আশপাশে বা আপনজন কারও মধ্যে এসব লক্ষণ দেখতে পেলে পাশ কাটিয়ে যাবেন না। তাকে যথেষ্ট সময় দিন, বোঝার চেষ্টা করুন, তিনি কী বলতে চান শুনুন, প্রয়োজন হলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নিতে বলুন। আপনার একটুখানি মনোযোগ হয়তো বাঁচাতে পারে একজনের জীবন!
অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে অ্যালকোহল বা অন্য
মাদকে আসক্তি, সিজোফ্রেনিয়া, শারীরিক কারণে সৃষ্ট মানসিক রোগ, ব্যক্তিত্বের বা পারসোনালিটি ডিজঅর্ডার। মুহূর্তের উত্তেজনার বশেও অনেকে আত্মহত্যা করেন, যাকে বলা হয় ‘ইমপালসিভ সুইসাইড’। এ ধরনের আত্মহত্যার পেছনে থাকতে পারে একাকিত্ব, অসহায়ত্ববোধ, সম্পর্কের অবসান, নিকটজনের মৃত্যু, আর্থিক ক্ষতি, দীর্ঘমেয়াদি রোগ বা ব্যথা, শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন, এমনকি কোনো মানবিক বিপর্যয়।

যাঁরা আত্মহত্যা করেন, তাঁদের দুই–তৃতীয়াংশ কারও না কারও কাছে মৃত্যুর ইচ্ছা প্রকাশ করে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলেছিলেনযাঁরা আত্মহত্যা করেন, তাঁদের দুই–তৃতীয়াংশ কারও না কারও কাছে মৃত্যুর ইচ্ছা প্রকাশ করে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলেছিলেন
কীভাবে চিনব

আত্মহত্যার ঝুঁকিতে আছেন, এমন মানুষের মধ্যে থাকে কিছু আগাম লক্ষণ। প্রধান লক্ষণ হচ্ছে আত্মহত্যার ইচ্ছা সম্পর্কে কোনো ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলা। কেউ আত্মহত্যার কথা বললে অনেকে মনে করেন তিনি হয়তো এমনি বলছেন, আদতে কাজটা করবেন না। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা আত্মহত্যা করেন, তাঁদের দুই–তৃতীয়াংশ কারও না কারও কাছে মৃত্যুর ইচ্ছা প্রকাশ করে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলেছিলেন। এসব ক্ষেত্রে সমস্যা তখনই দেখা দেয়, বারবার যখন কেউ আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করেন। এঁদের মধ্যেও অনেকে কিন্তু পরে আত্মহত্যা করেন। তবে করে ফেলার আগে আগে কথার ধরন ও প্রকাশভঙ্গিতে থাকে পরিবর্তন।

দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আগের আত্মহত্যাচেষ্টার ইতিহাস। দেখা গেছে, যাঁরা আত্মহত্যা করেন, তাঁদের ৪০ থেকে ৬০ শতাংশেরই আগে আত্মহত্যাচেষ্টার ইতিহাস আছে। এসব ক্ষেত্রে তাঁদের আত্মহত্যার ইচ্ছা থাকে দীর্ঘমেয়াদি, গভীর এবং আসেও বেশ ঘন ঘন। তাঁরা সাধারণত এমন কিছু পদ্ধতি বেছে নেন, যাতে মৃত্যু নিশ্চিত করা যায় এবং কাজটা এমন সময় করেন যেন উদ্ধার করার মতো কেউ আশপাশে না থাকেন। তাঁদের সঙ্গে আলাপচারিতায় বোঝা যায় যে সব দোষ, সব ব্যর্থতা, সব ভুলের দায় যেন তাঁরা নিজের ঘাড়েই নিতে চান।

তা ছাড়া যাঁরা হতাশ, সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন, বৃদ্ধ এবং মানসিক সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরাও আত্মহত্যার ঝুঁকিতে থাকেন। তাঁদের লক্ষণ হতে পারে বিষণ্নতা। এসব সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের যদি পর্যাপ্ত সহায়তা না থাকে তবেই বিপদ। কাজেই বিষণ্নতার লক্ষণগুলো চিনে রাখা জরুরি।

কী করব?
পরিবার বা আশপাশের কাউকে যদি দেখেন মনমরা, কাজকর্মে নিরুৎসাহী, নিরানন্দ, অমনোযোগী, খিটমিটে; যদি কারও খাবার আর ঘুমের অভ্যাসে পরিবর্তন দেখেন, দুর্বলতার জন্য বা এমনিতেই কাউকে কাজকর্মে ধীর হয়ে যেতে দেখেন, কথায় কথায় নিজেকে দোষী বা অপরাধী ভাবতে ও বলতে শোনেন, যদি কেউ অনেক পুরোনো কথা মনে করে কাঁদতে থাকেন—তাহলে জানবেন এই সবই বিষণ্নতার লক্ষণ। আরও মনে রাখতে হবে যে বয়স্ক মানুষ ও শিশুদের ক্ষেত্রে প্রকাশভঙ্গি হতে পারে ভিন্ন রকম। বিশেষ করে ছোটরা তাদের মনের অবস্থা সঠিকভাবে প্রকাশ করতে পারে না বলেই জেদ করে, অভিমান করে, খিটমিটে হয়ে যায়। এমনকি জিনিসপত্র ছোড়ে, নষ্ট করেও বিষণ্নতা প্রকাশ করে থাকে। বিষণ্নতা বোঝাতে পেটব্যথা, মাথাব্যথার মতো শারীরিক সমস্যার কথাও সামনে নিয়ে আসতে পারে।

আপনার একটুখানি মনোযোগ হয়তো বাঁচাতে পারে একজনের জীবনআপনার একটুখানি মনোযোগ হয়তো বাঁচাতে পারে একজনের জীবন
আপনার আশপাশে বা আপনজন কারও মধ্যে এসব লক্ষণ দেখতে পেলে পাশ কাটিয়ে যাবেন না। তাকে যথেষ্ট সময় দিন, বোঝার চেষ্টা করুন, তিনি কী বলতে চান শুনুন, প্রয়োজন হলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নিতে বলুন। আপনার একটুখানি মনোযোগ হয়তো বাঁচাতে পারে একজনের জীবন!

লেখক// রাশেদুল ইসলাম রাশেদ,প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, শিবরাম আদর্শ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, লালমনিরহাট

আংশিক তথ্য সূত্র: প্রথম আলো অনলাইন সংরক্ষণ

আপনার মন্তব্য লিখুন