ঢাকাশুক্রবার , ২৯ জানুয়ারি ২০২১
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মামাতো বোন যখন ঘরের বউ!

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
জানুয়ারি ২৯, ২০২১ ৫:০০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

লাইফস্টাইল ডেস্ক।।→ রংপুর, পার্কের মোড়ের মসজিদ রোডের পাশে বাড়িটা। বাড়ির চারপাশ খুব সুন্দর করে সাজানো-গোছানো। নানা ধরনের নানা রং এর লাইট ঝিকিমিকি করছে,আলো ছড়াচ্ছে চারদিকে। এই বাড়ির মানুষের আজ খুশির একটা দিন। আজ বাড়ির ছোট ছেলের বিয়ে,তাই সবাই খুব খুশি। সবাই নিজের মনের মত করে আনন্দ করছে।

আমি রাশেদ পারভেজ; বাড়ির দ্বিতীয় সন্তান। এক বড় ভাই আছে। আমি স্নাতকোত্তর কমপ্লিট করে এখন একটা জব করছি।

বড় ভাইয়ের বিয়ে হয়েছে। তাই বিয়ের সিরিয়ালটা আমার কপালেই পরলো। জবটা পেয়েছি ৩ মাস হয় নি। এরই মধ্যে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। এদিকে সামলে নিলেও ওইদিক দিয়ে পারছি না,উনার তাড়াতাড়িই বিয়ে করতে হবে।

বিয়েটা করতেছি মামাতো বোন নামক এক ডাইনোসরকে। যে আমাকে সারাদিন প্যারার উপর রাখে। উনার পরিচয়টা দিয়ে দেই,উনি হচ্ছেন রুসা।আমার আর রুসার বয়সের পার্থক্য ৫৩ মিনিট । উনি আমার ৫৩ মিনিটের ছোট। রুসা ৮ বছর পার হওয়ার পর থেকে আমাকে “ভাইয়া” বলে ডাকে নি,তুই করে বলতো। আর আমি রুসাকে খ্যাপানোর জন্য ৫৩ মিনিট বলে ডাকতাম; কারণ তিনি আমার ৫৩ মিনিটের ছোটো। আমরা অবশ্য একই ক্লাসে পড়তাম।  ৫৩ মিনিট নামটা এমন হয়েছিল এসএসসি পাশ করে আমরা যখন একাদশ শ্রেণিতে তখনো আমি রুসাকে ৫৩ মিনিট বলে ডাকতাম। বাকী বন্ধুরা ভেবে নিত ৫৩ মিনিট এর মানে অন্য কিছু।

 

এই ৫৩ মিনিট এর মজার এক কাহিনি সংক্ষেপে বলি: রুসা এসএসসি পাশ করেই একটা ছেলেকে ভালোবেসে ফেলেছিল আর আমিও অন্য একটা মেয়েকে পটানোর চিন্তায় ছিলাম। একদিন রুসা কলেজ ক্যাম্পাসে দাড়িয়ে ছেলেটার সাথে কথা বলছিল, সেই মহূর্তে আমি রুসার পাশে গিয়ে ৫৩ মিনিট বলে ডাক দিলাম। রুসা সংগে সংগে সাড়া দিল। তখন রুসার নবীন বয়ফ্রেন্ড রুসাকে বললো, সে তোমাকে ৫৩ মিনিট কেন বললো? রুসা বলার আগেই আমি দুষ্টামো করে বললাম: ভাইয়া আমরা ফুল ৫৩ মিনিট এক সাথে- এক কক্ষে ছিলাম। আর সেই ৫৩ মিনিটের আনন্দ ভুলতে না পেরে আমি রুসাকে আদর করে ৫৩ মিনিট বলে ডাকি। বলা মাত্রই রুসার নবীন ৪ দিনের প্রেম ভেঙ্গে চৌচির!আসলে রুসা কাউকে ভালোবাসুক এটা আমি চাইতাম না।  এ  জন্যই মূূলত এমন করে বলেছিলাম। কিন্তু ঘটনাটি কলেজের সবার মুখে মুখে রটে গেলো। রুসা এবং আমি দুজনেই লজ্জায় ১৩ দিন কলেজে যাই নি। তারপরও সবাই বলতো, আমরা অবশ্য শুনেও না শোনার অভিনয় করতাম।

ধীরে ধীরে রুসা আমায় ভালোবাসে। খুব বেশি ভালোবাসে। যদিও আমি তাতে কোন সময় সাই দেই নি। সময় আস্তে আস্তে,ধীরে ধীরে সব কিছুকে পাল্টায় । আমার মনের অবস্থাও সময় পাল্টে দিয়েছে। আস্তে আস্তে রুসাকে নিজের রাণী ভাবতে শুরু করলাম,কিভাবে যে এই বেরাজালে ফেসে গেলাম তা জানতেই পারলাম না।

বিয়েটা আমাদের পারিবারিকভাবে হলেও বিয়ের আগে আমাদের ২ বছরের প্রেম ছিল। আমি যখন অনার্স শেষ বর্ষে তখন হঠাৎ রুসাকে অন্য ছেলে পক্ষ দেখতে আসে। তখন রুসা আমাদের ভালোবাসার কথা জানিয়ে দেয়। কেউ আর আপত্তি করে নি।তখন থেকেই আমাদের বিয়ে ঠিক করা। আর এখন চাকরি পাওয়ার পরেই বিয়ে।

সব নিয়ম পালনের মাধ্যমে বিয়েটা শেষ হয়ে গেল। বউ নিয়ে বাড়ি রওনা দিলাম। বাড়িতে আসার পর থেকে সবাই বউকে নিয়ে পরে রয়েছে। তাই আমি ছাদে দাঁড়িয়ে পরিবেশটাকে অনুভব করতেছি। কখন যে রাত ১২ টা বেজে গিয়েছে,খেয়ালি করি নি।তাই ঘরের দিকে পা বারালাম।

ঘরে ঢুকার পর রুসা এসে পায়ে সালাম করে খাটে গিয়ে বসলো। আমিও খাটে গিয়ে আস্তে আস্তে রুসার ঘোমটা তুললাম। চাঁদের মত মুখ, হরিণের মতো দুটো চোখ,গোলাপি ঠোঁট,ঠোঁটের নিচে কালো তিল,উফ!অনেক সুন্দর লাগছে রুসাকে। রুসার মাথাটা ধরে আমার বুকের উপর রাখলাম,রুসা আমার বুকে হেলান দিয়ে রাখলো। একটু পর রুসা মুখ তুলে আমার দিকে তাকিয়ে বলল:
রুসা:এই,চল না ঘুরে আসি?
আমি:এত রাতে কোথায় যাবি?
রুসা:ব্রিজের ওখানে চল।
আমি:যাবো কিভাবে?
রুসা:আব্বুর(মামার) বাইক নিয়ে?
মনে পরে গেল কালকে মামা মানে আমার শ্বশুর মশাই তার বাইক আমাদের এখানে রেখে গিয়েছে।আমি আর কথা বারালাম না,বেরিয়ে পরলাম এক রোমান্টিক মোমেন্ট অনুভব করার জন্য।

ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছি। এককানে হেডফোন। আমার কাধে মাথাটা এলিয়ে দিয়ে চোখ বুজে এককানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছে মেয়েছি। গান চলছে:
“আজ শূন্যতা থেকে মুক্তি পেয়েছে মন,
এক নতুন সাজে সেজেছে এই জীবন।”
এরই মধ্যে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলো। এতক্ষণ যা যা ঘটেছে,সব ছিল স্বপ্নের মধ্যে! মানে কাল্পনিক। বাস্তবে রুসা নামে আমার কোনো মামাতো বোন নেই। কিন্তু স্বপ্নের মাঝে গল্পকথাগুলোর মতোই ঘটেছিল। সত্যি বলতে এতক্ষণ কষ্ট করে যে কাহিনি পড়লেন তা পুরোটাই রূপকথার গল্পের মতো। 

কাল্পনিক ঘটনাগুলো কিংবা চরিত্র / নাম কারোর বাস্তব জীবনের সাথে মিলে গেলে পত্রিকা অফিস দায়ী থাকবে না।
– রাশেদুল ইসলাম রাশেদ/আরইসআর। 

আপনার মন্তব্য লিখুন