আশরাফুল হক,লালমনিরহাটঃ সাধ্য আছে কার,দেলোয়ার মাষ্টারের গ্যাং বাহিনীর অবাধ্য হবার। লালমনিরহাট শহরের অদুরে একটি গ্রামের নাম রতিপুর। এ গ্রামের বেশিভাগ মানুষ দিনমজুর হলেও সহজ, সরল ও শান্তি প্রিয়। এসব মানুষের মাঝে অশান্তির রাজত্ব কায়েম করছেন দেলোয়ার মাষ্টারের গ্যাং বাহিনী। ফলে হত্যাসহ একাধিক মামলা আসামী গ্যাং বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে চলতি বছরে (১২ মার্চ) রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি ও র্যাব, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার লালমনিরহাট সহ জেলা শিক্ষা অফিসার কুড়িগ্রাম বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন এলাকাবাসী।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের রতিপুর গ্রামের মৃত নেছামুদ্দিনের ছেলে দেলোয়ার হোসেন ওরুপে দেলোয়ার মাষ্টার। তিনি কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের ফতেখাঁ কেরামতিয়া দাখিল মাদারাসার সহকারী শিক্ষক। রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব, স্বার্থের দাম্ভিকতায় তিনি নিয়মিত মাদারাসায় যান না। মাদারাসা ফাঁকি দিয়ে ২০০৬ সালে দেলোয়ার হোসেন ওরুপে দেলোয়ার মাষ্টারের নেতৃত্বে ওই এলাকায় বেকার যুবক নিয়ে গড়ে তুলেন একটি গ্যাং বাহিনী। যার সদস্য সংখ্যা ১৫/২০ জন। ইতিমধ্যে তাদের নির্যাতনের শিকার হয়ে থানা ও বিজ্ঞ আদালতে ১০/১২টি মামলাসহ একাধিক জিডি দায়ের করেন ভোক্তভোগীরা।
দেলোয়ার মাষ্টারসহ তার সাঙ্গ-পাঙ্গর বিরুদ্ধে মামলা গুলো হল, কুপিয়ে হত্যা মামলা নং-১৮, তাং-২২/০৩/ ২০০৮ইং। জমি দখল ও হত্যার চেষ্ঠা মামলা নং-০৫/১৭১, তাং-১০/০৮/০৬ইং। বসতবাড়ী জমি দখলে জিডি নং-১২১০, তাং-২৯/১১/২০০৬ইং। ২০০৬ সালে মারপিট, আসবাপত্র ভাংচুর, ধান ও চাল লুটপাটের ঘটনায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
২০০৭ সালে দেশে সামরিক শাসনের সময় জমি দখলের চেষ্ঠায় বাধা দেয়ায় বৃদ্ধার ডান হাত ভেঙে দেওয়ায় সেনা ক্যাম্পে অভিযোগ। ২০০৮ সালে হত্যা মামলা তুলে নিতে বাদীকে হুমকি জিডি নং-১২৩৬, তাং-২৭/০৪/২০০৮ইং। ২০২২ সালে পিটিশন নং-৬৫৮/২০২২(এ) দায়ের করা হয়। ২০২৩ সালে অসহায় ভ্যান চালকের জমি দখল করায় অভিযোগ দায়ের করেন এশার আলী। ১৩ মার্চ দুপুর ১টায় ফতেখা কেরামতিয়া দাখিল মাদারাসায় গিয়ে দেলোয়ার মাষ্টারকে পাওয়া যায়নি। দেখা হয় ওই মাদারাসার সুপার গোলাম রব্বানী সহ কজন শিক্ষকের সাথে।
তখন সুপার জানান, অনিয়মিত ভাবে মাদারাসা আসায় তাকে ইতিপূর্বে সর্তক সহ শোকজ করা হয়েছিল। আজ দেলোয়ার মাদারাসায় আসেনি। ছুটি নিয়েছেন। কিন্তু অনেক খোজাখুজির পর দেলোয়ারের ছুটির দরখাস্ত দেখাতে পারেনি সুপার।
এ বিষয়ে দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলোয়ার মাষ্টার বলেন, আমি মাদারাসা ফাকি দেই না। প্রয়োজন হলে ছুটি নেই। ১৩ তারিখেও ছুটি নিয়েছিলাম। তাছাড়া এলাকায় আমার কোন গ্যাং বাহিনী নেই। বিভিন্ন ঘটনায় ১০/১২টি মামলা হয়েছে। তারমধ্যে কিছু নিষ্পত্তি হয়েছে আবার কিছু মামলা চলমান রয়েছে।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আসাদুজ্জামান বলেন, দেলোয়ার মাষ্টারের বিরুদ্ধে এতো মামলা আছে, কেউ আমাকে জানাননি। তবে অনিয়মিত ভাবে মাদারাসা আসায় বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। একাধিক অভিযোগ মাথায় নিয়ে বেপরোয়া দেলোয়ার মাষ্টার গ্যাং বাহিনীর বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে র্যাব ও পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন শান্তিপ্রিয় এলাকাবাসী।