ঢাকারবিবার , ৩১ অক্টোবর ২০২১
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

লালমনিরহাট ওকড়াবাড়ী কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ!

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
অক্টোবর ৩১, ২০২১ ৯:৪০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

খাজা রাশেদ।। লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের ওকড়াবাড়ী কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত সাধারন মানুষ। দেশের প্রান্তিক মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে বর্তমান সরকার সারা দেশে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করে।কিন্তু, দিনের পড়ে দিন ওকড়াবাড়ী কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে কাঙখিত সেবা পাচ্ছেন না হাজার,হাজার মানুষ।

জানা যায়, লালমনিরহাট সদর উপজেলায় অনেকগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। এসব ক্লিনিকের মাধ্যমে এলাকার সাধারন মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার কথা। এসব ক্লিনিকের মাধ্যমে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, প্রজনন স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, টিকাদান কর্মসূচি, পুষ্টি, স্বাস্থ্যশিক্ষা, পরামর্শসহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করার কথা রয়েছে। অথচ ওকড়াবাড়ী কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম যেভাবে চলছে, তা সত্যিই সেখানকার মানুষের জন্য হতাশাজনক।

গত ২৪ অক্টোবর সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেলা ১২ টা বাজলে ও তখনো খুলেনি ক্লিনিকের তালা। ওকড়াবাড়ী কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি রীনা বেগমের অফিস ফাঁকি সহ দায়িত্ব পালনে অনিয়ম ও অবহেলার কারণে । মুখ থুবড়ে পড়েছে ওই কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম।

ওকড়াবাড়ী ক্লিনিকের সিএইচসিপি রিনা বেগম সময় মতো ক্লিনিকে আসেনা। মাঝে মাঝে ক্লিনিকে আসলেও মানুষকে ঠিকমত সেবা প্রধান না করেই ক্লিনিক বন্ধ করে তার নিজের ব্যক্তিগত কাজে বাড়িতে চলে যান এবং চিকিৎসার বিপরীতে টাকা নেন এমনটাই অভিযোগ ওই এলাকার সাধারন মানুষের। ফলে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ওই এলাকার সাধারন মানুষ গুলো।

ওকড়াবাড়ী কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা ওই এলাকার ফজিলা বেগম (৫৫)বলেন, আমি গত কয়েকদিন থেকে জ্বরে ভুগতেছি তাই ঔষধ নিতে ক্লিনিকে এসেছিলাম । কিন্ত এসে দেখি ক্লিনিক বন্ধ। সুধু আজকে নয় প্রায় এই ক্লিনিক এরকম করে বন্ধ থাকে। তাই বাধ্য হয়ে ঔষধ না নিয়েই বাড়ি ফিরে যেতে হয়।

হীরামানিক এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা মেহের বানু (৩৮)বলেন, মাথার ব্যাথা জ্বর তাই ঔষধ নিতে আসছি কিন্তু এসে দেখি ক্লিনিক বন্ধ। এখন কার কাছে নেই ঔষধ তাই ফিরে বাড়ী চলে যাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, এই ক্লিনিকে যে আপা থাকেন তিনি মাঝে মাঝে এরকম করে ক্লিনিক বন্ধ করে কোথায় যে যায় আর আমরা ঔষধ নিতে এসে ঘুরে যাই যদিও কখনো দেখা পাই ঔষধ চাইলে ঠিকমত ঔষধও দেয় না । এখন বেলা ১২টা বাজে তবুও ক্লিনিক খুললো না।কয়টার সময় ক্লিনিক খুলবে সেটা এই প্রতিবেদকের কাছে তিনি জানতে চান।

এদিকে ওই এলাকার প্রবীন পল্লী চিকিৎসক ডা. এমদাদুল হকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এরকম ঘটনা প্রায়ই হয়। আমরা দেখেও কিছু বলতে পারিনা।বললেই বলে আমাদের অফিসে যত ট্রেনিং সেখানেই যায়। নাকি, ক্লিনিক খুলে বসে থাকবো। তাই ক্লিনিক বন্ধ করে ট্রেনিং এ যাই।

এবিষয়ে ওই ক্লিনিকের ( সিএইচসিপি ) পদে কর্মরত রীনা বেগমের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, আমার অফিসের ল্যাপটপ নষ্ট হয়েছে তাই ল্যাপটপ ঠিক করার জন্য আমি এসেছি।

অথচ,উক্ত ক্লিনিকের সভাপতি ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহিনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আজ নাকি ওনার মিটিং আছে তাই তিনি ক্লিনিকে আসবেননা বলেছিলেন।চিকিৎসার বিপরীতে টাকা নেওয়ার করা তিনি স্বীকার করে বলেন, ক্লিনিক পরিস্কার -পরিচ্ছন্নতা রাখার জন্য একজন কাজ করেন তাকে মাসে কিছু টাকা দিতে হয়।তাই,রোগী প্রতি ৩/৪ টাকা করে নেওয়া হয়।অথচ ক্লিনিকের ভিতর সহ চতুর্দিকে ময়লা -,আবর্জনা ছড়িয়ে, ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়।

এছাড়াও অনেক কমিউনিটি ক্লিনিকে সিএইচসিপি থাকলেও তারা ঠিক সময়ে ক্লিনিকে আসেন না, এলেও ১২টার দিকে চলে যান ফলে এলাকার বাসিন্দারা ঠিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না। হারাটী ইউনিয়নের ওকড়াবাড়ী কমিউনিটি ক্লিনিকে গত ২৪ অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে গিয়ে সিএইচসিপি রীনা বেগমকে পাওয়া যায়নি।

শুধু এসব ক্লিনিকই নয়, উপজেলার আরও অনেক স্থানে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে একই ধরনের নাজুক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সংস্কারের অভাবে ক্লিনিকের ভবনগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। বেশিরভাগ ক্লিনিকে ওষুধের সংকট লেগেই থাকে। অবকাঠামোগত সমস্যার পাশাপাশি দুর্নীতি ও অনিয়ম এর কারণে ক্লিনিকগুলোর সেবা কার্যক্রম বলতে আর কিছু নেই।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ দীপংকর রায়ের সাথে কথা বললে তিনি বলেন,আজকে আমাদের কোনও মিটিং ছিলোনা।ওনার নামে অফিস ফাঁকির আরো অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে যদি কেউ লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন