গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ মাহাফুজুর রহমান, গাইবান্ধা জেলা শহরের মাষ্টারপাড়া এলাকার একজন ওষুধ ব্যবসায়ী। সম্প্রতি নন এফেয়ার প্রসিকিউশনে মাদক সেবন করার অপরাধে ১০ দিন জেল খেটেছেন তিনি। তার দাবি তাকে সদর থানার এসআই নয়ন কুমার সাহা অন্যায়ভাবে ফাঁসিয়েছেন।
বুধবার(২৮ সেপ্টেম্বর) ডাকযোগে আইজিপি বরাবর ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তসহ এসআই নয়ন সাহার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের আবেদন জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী মাহাফুজুর রহমানের অভিযোগ, গত ০৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার এশার নামাজ আদায় করে প্রতিদিনের ন্যায় দোকানে কুরআন তেলাওয়াত করছিলাম। এমন সময় হঠাৎ সিভিল ড্রেসে ৬/৭ জন পুলিশ কর্মকর্তা এসে পবিত্র কুরআন ঝাটকা দিয়ে সরিয়ে দেয়। আমি তাদের সালাম দিতেই একজন বল আমাদের কাছে খবর আছে তোর দোকানে ইয়াবা আছে। এই বলে আমার দোকান সবাই মিলে তছনছ করে। পরে দোকানে কিছু না পেয়ে তারা ৩ পিচ খালি ফেনসিডিলের বোতল, ছোট ছোট ৩ পুরিয়া গাঁজা কোথায় থেকে যেন বের করে আমাকে প্রথমে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে আমাকে কোন ধরনের পরীক্ষা না করে ডাক্তারকে বলে ইনি গাঁজা খেয়েছে । এরপর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক সরকারি টিকিটে কি জেনো লিখে দেয়, তারপর আমাকে সদর থানায় নিয়ে যায়। থানার হাজতখানায় গভীর রাতে এসআই নয়ন সাহা আমাকে এসে রাগান্বিত ভাষায় বলেন তুই মদ খেয়েছিস এটা আদালতে স্বীকার করবি তাহলে তোকে ২৫০ টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দিবে। আর এইসব বিষয় নিয়ে কোন ধরনের বাড়াবাড়ি করবি না।
ঘটনার পরদিন শনিবার আমাকে একটি নন এফেয়ার (গাঁজা সেবনের মামলা) দিয়ে আদালতে প্রেরণ করিলে আদালতে বিচারকের কাছে গাঁজা খাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করলে বিচারক আমাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। আমি টানা ১০ দিন কারাভোগ করে জামিনে মুক্তি লাভ করি। আমার সাথে ঘটে যাওয়া অন্যায় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখালেখি হয়েছে এবং স্থানীয়ভাবে নিউজ হয়েছে।
ভুক্তভোগী মাহাফুজুর রহমান বলেন,দোকানে কিছু না পেয়ে তারা ৩ পিচ খালি ফেনসিডিলের বোতল ছোট ছোট ৩ পুরিয়া গাঁজা কোথায় থেকে যেন বের করে আমাকে থানায় নিয়ে যায়। পরে আমাকে গাঁজা খাওয়ার মামলায় আদালতে পাঠিয়ে দেয়। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও পরিকল্পিত। উক্ত ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে পুলিশ প্রশাসনের কাছে শান্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে সদর থানার এসআই নয়ন কুমার সাহার কাছে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে জানান, মানুষের স্বার্থে আঘাত লাগলে মানুষ এগুলা করে। আমার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। কথা শেষ না হওয়ায় দ্বিতীয়বার ফোন করলে নয়ন সাহা বলেন, আমি খেয়ে আপনাকে ফোন দিব। পরে ঘন্টা খানেক পর একাধিকবার কল দিলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মাসুদুর রহমান বলেন, নয়ন কুমার সাহার বিরুদ্ধে আইজিপি বরাবর অভিযোগ হয়েছে কিনা দাপ্তরিকভাবে আমাদের কাছে কোন চিঠি আসে নাই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে নয়ন সাহার বিরুদ্ধে লেখালেখি হচ্ছে এ বিষয়টাকে কিভাবে দেখবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টা আমরা ক্ষতিয়ে দেখবো।