ঢাকাশনিবার , ২৭ আগস্ট ২০২২
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

৯ কারসাজিতে অস্থির হচ্ছে চালের বাজার!

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
আগস্ট ২৭, ২০২২ ৪:৪৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দেশে চালের বাজারে অস্থিরতা এমন একসময় শুরু হয়েছে, যখন ভরা মৌসুম। এ মৌসুমে বাজারে চালের সরবরাহ সবচেয়ে বেশি থাকে। গত কয়েক দিনে চালের বাজারে যেভাবে দাম বেড়েছে, তা অস্বাভাবিক।

বাজারে চালের দাম বাড়ার কারণ অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, কোনো একটি সুনির্দিষ্ট কারণ কেউই শনাক্ত করতে পারছেন না। বেশ কয়েকটি বিষয় একযোগে কাজ করছে এর পেছনে।

অবশেষে সিজারিয়ান অপারেশন চালু হলো জগন্নাথপুরে
রণ সিকদার ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক পুনঃনির্বাচিত
চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে চালের ঘাটতি আছে। কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যবসায়ীরা মজুতদারি করছেন। আবার বাজারে ঘাটতি আতঙ্কও নানাভাবে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

বাজারে অনুসন্ধান চালিয়ে এবং চাল উৎপাদন ও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলে ৯টি কারণ শনাক্ত করেছে এই প্রতিবেদক।

এগুলো হলো:
দেশে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ধান উৎপাদনে বড় ধরনের ঘাটতি, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থার বৈশ্বিক খাদ্যসংকটের পূর্বাভাস এবং তা গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার, সংকট পুঁজি করে অনৈতিক মুনাফার আশায় ধান-চালের মজুত, বাজারে ধানের সরবরাহ কমে যাওয়া ও দাম বেড়ে যাওয়া, চালকলে চাল উৎপাদন আগের তুলনায় কমে যাওয়া, খোলাবাজার থেকে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ধান-চাল কেনা, সরকারিভাবে চাল আমদানি না হওয়া, আন্তর্জাতিক বাজারে চড়া দাম এবং ২৫ শতাংশ শুল্কভার নিয়ে চাল আমদানিতে বেসরকারি খাতের নিরুৎসাহিত মনোভাব এবং ডিজেলের দাম বৃদ্ধিতে চাল উৎপাদন ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধি।

চালের বাজারে অস্থিরতার কারণ শনাক্ত করতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব কোনো পর্যালোচনা এখনও নেই।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খাদ্যসচিব মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘ভরা মৌসুমে দেশে চাল নিয়ে এমন অস্থিরতা তৈরি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু সেটিই হচ্ছে।’

তিনি এর কারণ হিসাবে বলেন, ‘এমন হতে পারে, কোনো ব্যবসায়ীই কোনো নিয়ম-কানুন মানছেন না। হতে পারে, কারও কারও অতি লোভ- এ রকমটাও হতে পারে। কেউ উদ্দেশ্যমূলকভাবে কিছু করছে কি না সেটিও যাচাই করে দেখতে হবে।’

দেশে সর্বাধিক ধান উৎপাদন হয় বোরো মৌসুমে। মার্চ থেকে মে পর্যন্ত সময়ে এই ফলন গড়ায়। যার থেকে উৎপাদিত ধানের ৫৮ ভাগ সরবরাহ মেলে। এরপর শুরু হয় আউসের মৌসুম, যার ফলন বাজারে গড়াবে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই। ফলে চালের সরবরাহ আরও বাড়ার কথা। তাহলে চালের দামে এত অস্থিরতা কেন?

নওগাঁ চালকল মালিক সমিতির সভাপতি নিরোধ চন্দ্র সাহা বলেন, চালের বাজারে অস্থিরতার পেছনে রয়েছে ঘাটতি।

তিনি বলেন, ‘চাল ব্যবসায়ীদের যেটা হিসাব, সেটা হলো ধান উৎপাদনে ঘাটতি আছে। তবে কী পরিমাণ ঘাটতি আছে, সরকার তার হিসাব স্পষ্ট করছে না। নানা মাধ্যমের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ব্যবসায়ীদের ধারণা জন্মেছে, লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় দেশে ধান উৎপাদন ঘাটতি ২৫ থেকে ৩০ লাখ টন। মূলত এটিই হলো অস্থিরতার বড় কারণ।

‘আবার এটাও সত্য, এই মৌসুমে চালের বাজার অস্থির হওয়ার কথা নয়। শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে বাজারে চালের দাম ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়ার বিষয়টি আসলে আমরা নিজেরাও হিসাব করে পাই না। তবে ধারণা করছি, বেশ কিছুদিন ধরে নানা মাধ্যমে বলা হচ্ছে, বিশ্ব খাদ্য সংকটে পড়তে যাচ্ছে। এ ধরনের সংবাদ পেলে আমাদের তো একটা চরিত্র আছে সুযোগ নেয়ার। ভোক্তাদের বেলায় তারা বেশি বেশি কেনেন। লাগবে এক বস্তা, নিয়ে যান দুই বস্তা। এতে প্যানিক সৃষ্টি হয়। বাজার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। আবার কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছে, তারাও একটু সুযোগ নেয়।

‘এ ছাড়া ইদানীং দেশে যেসব বড় বড় করপোরেট কোম্পানিগুলো বাজারে এসেছে, নানা আশঙ্কা থেকে তারা বড় লটে মার্কেট থেকে ধান-চাল কিনে নিয়েছে। তারা প্যাকেজিং চাল বাজারজাতকরণের উদ্দেশ্যে বাজার থেকে একটা বড় পরিমাণ পণ্য তুলে নিচ্ছে। তাদের দেখে অন্যান্য সাধারণ ব্যবসায়ীও এর সুযোগ নিচ্ছে।’

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, বাজারে এখন ধানের সংকট চলছে। কেউ তেমন আর ধান বিক্রি করছে না। ধানের সরবরাহ কমে যাওয়ায় বেড়ে যাচ্ছে দামও। মিনিকেট চাল তৈরি হয় এমন ধানের মণপ্রতি দাম এখন ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা, যা মাস কয়েক আগেও ছিল ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা। আবার এই বাড়তি দামেও চাহিদা অনুযায়ী ধান পাচ্ছেন না মিলাররা।

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রশ্ন, ধান না পেলে মিলগুলো চাল উৎপাদন বাড়াবে কীভাবে?

এর সঙ্গে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো যোগ হয়েছে জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি। এতে ধান থেকে চাল উৎপাদন খরচ কেজিতে বেড়েছে ২ টাকা। ফলে যে পরিমাণ চাল উৎপাদন হচ্ছে, তা বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

সেই বাড়তি দামের চাল ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে আরও বাড়তি দামে। কারণ মিলগুলো থেকে চাল পরিবহনের ভাড়াও বেড়েছে প্রতি কেজিতে ৬০ পয়সা এবং ৫০ কেজির বস্তায় ৩০ থেকে ৪০ টাকা।

এতে ঢাকার খুচরা বাজারে চিকণ চাল বিক্রি হচ্ছে ৭২ থেকে ৭৬ টাকায় এবং মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৬ টাকায়।

আপনার মন্তব্য লিখুন