ঢাকামঙ্গলবার , ২০ জুলাই ২০২১
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

স্বপ্নের বাড়িতে প্রথম ঈদ

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
জুলাই ২০, ২০২১ ১২:৪৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আনিসুর রহমান,স্টাফ রিপোর্টার ।। স্বপ্নের বাড়ীতে নতুন ঘরে ঈদের আনন্দে চোখে মুখে হাসির জোয়ার এনেছে হাতিয়া সোলার বাঁধ রাস্তার জোবেদা বেওয়া (৭৮)।তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, জীবনের শেষ সম্বলটুকুও ব্রহ্মপুত্র নদীর পেটে। সব হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছে হাতিয়া ইউনিয়নের সোলার বাজার বাঁধ রাস্তা পাশে। সেখানেই ছেলে ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে দিন কাটত তার।

ঘর পেয়ে কেমন লাগছে জানতে চাইলে জোবেদা বেওয়া জানান, নদীত হামার সউক ভাসি নিয়ে গেছে। বান্দের রাস্তায় আসি কোন রকম ঘর তুলি ছাওয়া পোওয়া নিয়ে দিন কয়টাই। ইয়ারে মদ্দে সরকার হামাক ঘর দেইল। আইতত (রাতে) এলা (এখন) হামরা শান্তিতে নিন্দ (ঘুম) পারবের পাই। জীবনে কোনদিন ইটের ঘর পাইম এটা ভাবং নাই।নয়া ঘরত ঈদ করমো। কি যে ভাল নাগে বাহে। এমন একটি ঘর পাবেন এটা তার কাছে যেন স্বপ্নের মত।

আরেকজন সন্তান-সন্ততি, নাতি-নাতনিদের জন্ম অন্যের জায়গায় নির্মিত ভাঙা ঘরে। দাম্পত্য জীবনের পুরো সময়টা কাটিয়েছেন অন্যের ভিটায়। বয়সের ভারে নুুুয়ে গেছে চেনবানু (৮৫)। স্বামী মারা গেছেন ৫ বছর আগে। অভাবের সংসার, কোন রকম টেনে টুনে দিন কাটত তার। জমি কিনে বাড়ী করার সামর্থ ছিল না চেনবানু বেওয়ার । চেনবানু বেওয়া উপজেলার ধামশ্রেণী ইউনিয়নের মৃত করিম বকসের স্ত্রী। জীবন সায়াহেৃ এসে জমির দলিল ও ঘরের কাগজপত্র সহ দুই শতাংশ জমির উপর দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি সেমি পাকা ঘর পেয়েছেন তিনি। ঘর পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে ঝড়ি আসলে ভয় নাগছিল। শীতের সময় টিনের ছেদ দিয়ে পানি পড়ে গাও ভিজি গেছলো। এখন আর হামার কোন ভয় নাই। সরকার ঘর দিয়ে হামার মত গরিব মানষের মেলা উপকার করছে। ছাওয়া পোওয়া নিয়ে সুখে শান্তিতে আছি।এরকম একি কথা বলছেন অনকেই।

শুধু চেনবানু কিংবা জোবেদা বেওয়া নয়।ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুজিববর্ষে “বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না” প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তাদের মত এ উপজেলায় ১৩ টি ইউনিয়নে ভূমিহীন ও গৃহহীদের পূনর্বাসনের জন্য “ক” শ্রেণির প্রথম পর্যায়ে ২ শ ও দ্বিতীয় পর্যায়ে দেড় শ সাড়ে ৩ শ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে দুই শতাংশ জমির মালিকানাসহ ৩৯৪ বর্গফুট আয়তনের দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি করে সেমি পাকা ঘর উপহার দেয়া হয়। প্রতিটি ঘরে ৩ ফুট প্রস্থ ৬ ফুট উচ্চতা একটি দরজা, ৪ টি জানালা, একটি রান্না ঘর ও একটি বাথরুম রয়েছে।

সরেজমিনে উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, লাল-সবুজ রংয়ের সারি সারি দৃষ্টি নন্দন বাড়ী। বাড়ীগুলো দেখে যে কোন কারো নজর কাড়তে পারে। এক সময় যাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না। তারাই আজ সেই ঘরের মালিক।

হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন বলেন, প্রতি বছর নদী ভাঙনের শিকার হয়ে এ ইউনিয়নে শত শত মানুষ বাঁধ রাস্তাসহ বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেয়। এসব ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য আমার ইউনিয়নে ২৮ টি ঘর বরাদ্দ দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও প্রকল্পের সদস্য সচিব সিরাজুদ্দৌল্লা বলেন, দুই ধাপে এ উপজেলায় ৩৫০ পরিবারকে খাস জমি উপর একটি করে দৃষ্টিনন্দন বাড়ি দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার ও প্রকল্পের সভাপতি নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে জায়গা নিবার্চন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার বাস্তবায়নে মুজিববর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পূনর্বাসনের জন্য এত সুন্দর একটি করে ঘর তৈরি করে দিতে পেরেছি, এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।

আপনার মন্তব্য লিখুন