রাশেদুল ইসলাম রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টারঃ একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে উধাও গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য আবু সালেহ মোঃ আব্দুল আজিজ মিয়া ওরফে ঘোড়ামারা আজিজের সমর্থকরা পুরো উপজেলা জুড়ে গা ঢাকা দিয়ে আছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে। চার পুলিশ হত্যাসহ ১৩ মামলার আসামি আজিজ প্রকাশ্যে না থাকলেও তার দল জামায়াতের আখড়া হিসেবে উপজেলাটি এখনও ব্যাপক পরিচিত ও সমালোচিত।
এই উপজেলায় তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক পেতে দলীয় মনোনয়ন পত্র জমা করেন প্রায় অর্ধশতাধিক প্রার্থী। তারা সবাই ইউনিয়ন আ’লীর বিভিন্ন পদের নেতা-কর্মী। অভিযোগ আছে এর মধ্যে ছিল কিছু অনুপ্রবেশকারী ও সুবিধাবাদী নেতাকর্মী ছিলেন।
গত শুক্রবার (২২ অক্টোবর) তৃতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সুন্দরগঞ্জের ১৩ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে যারা নৌকা প্রতীকে লড়বেন তাঁদের নাম চূড়ান্ত করে দলটির মনোনয়ন বোর্ড। কিন্ত সুন্দরগঞ্জে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেক ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ত্যাগী ও পরীক্ষিতরা মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে উপজেলার নেতাকর্মীদের মধ্যে।
পরীক্ষিত ও জনপ্রিয় নেতাদের ইউপি নির্বাচনে নৌকার টিকেট দেয়া হয়নি বলে নেতাদের অভিযোগ ডজনে ভরা। অভিযোগ ঘুরপাক খাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও। যারা ওইসব কম জনপ্রিয় নেতাদের মনোনয়ন পাইয়ে দেয়ার জন্য তদবির করেছেন তাদের ওপর অধিকাংশ মনোনয়ন বঞ্চিত নেকাকর্মীরা ক্ষুব্ধ।
সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ওদের নৌকার টিকিট নিয়ে বৈতরণী পাড় হওয়া দুঃস্বপ্ন হতে পারে বলে আশংকা বিক্ষুদ্ধ নেতৃবৃন্দের। স্থানীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শক্তি ও ঐক্যকে ধরে রাখার লক্ষ্যে অবিলম্বে জনপ্রিয় ও দলের ত্যাগী নেতাদের দলীয় মনোনয়ন দেয়ার জন্য দলের হাইকমান্ডের প্রতি অনুরোধ জনিয়েছেন উপজেলার নেতৃবৃন্দ। অন্যথায় এর ব্যতিক্রম হলে এবং নির্বাচনে ফলাফল খারাপ হলে এর সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব মনোনয়ন পাইয়ে দেয়ার প্রক্রিয়ায় যারা যুক্ত ছিলেন তাদেরকেই নিতে হবে বলে দাবী বিজ্ঞ রাজনীতিবীদদের ।
এদিকে জনপ্রিয় ও দলের ত্যাগী নেতাদের দলীয় মনোনয়ন না দেয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে তৃণমূল থেকে শুরু করে প্রবীণ রাজনীতিবীদদের মাঝে। তাদের ফেসবুক স্টাটাসে শুরু হয়েছে নির্বাচনের হালচাল নিয়ে নানা মেরুকরণ। তবে এবারের নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী বাড়তে পারে বলে সমালোচনা হচ্ছে। কিন্তু জাতীয় পার্টিকে নিয়ে সমীকরণটা কিছুটা জটিল। কারণ এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ইউনিয়ন দখল করার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান রাজনীতি বিশ্লেষকগণ।
উল্লেখ্য যে, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ২ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। মনোনয়নপত্র বাছাই ৪ নভেম্বর ও প্রত্যাহারের শেষ সময় ১১ নভেম্বর। ভোট গ্রহণ হবে ২৮ নভেম্বর।