স্টাফ রিপোর্টার।। ময়মনসিংহে মাদ্রাসার শিক্ষকের পেটানোতে নিহত মাদ্রাসাছাত্র’ এই বিষয়বস্তুতে সম্প্রতি ফেসবুকে একটি খবর একাধিক ছবিসহ ভাইরাল হয়েছে। বুধবার (১০ মার্চ) ‘Shahanaz Begum’ নামের আইডি থেকে প্রথম ঘটনাটির বর্ণনা ও ছবি পোস্ট করা হয়।
পোস্টটিতে দাবি করা হয়েছে, ‘গত রবিবার ময়মনসিংহের ভালুকায় আমিনুল ইসলাম নামের এক মাদ্রাসা শিক্ষক একই মাদ্রাসার তাওহিদুল ইসলাম নামের ছাত্রকে বেধড়ক পেটালে ছাত্রটি মারা যায়। পড়া মুখস্থ করতে না পারায় শিক্ষক হাফেজ আমিনুল লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ওই মাদ্রাসাছাত্রের পাজরের হাঁড় ও একটি পা ভেঙে দেন। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন ওই শিক্ষক।
গত রোববার রাতে ঢাকার বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাওহিদুল ইসলাম (১০) নামে ওই ছাত্র মারা যায়। সে ভালুকার ডাকাতিয়া ইউনিয়নের পাঁচগাও গ্রামের কয়েস মিয়ার ছেলে। এদিকে ঘটনার পর থেকেই আবাসিক ছাত্রদের মাদরাসায় ফেলে গা ঢাকা দিয়েছেন শিক্ষকরা।’
কিন্তু গণমাধ্যম যাচাই করে দেখেছে, মাদ্রাসার ছাত্রকে পিটিয়ে মেরে ফেলার ভাইরাল খবরটি বেশ পুরানো। ঘটনাটি গত রবিবারের নয়। বরং তাওহিদুল ইসলাম নামের সেই ছাত্রটি মারা গেছে ২০১৮ সালে।
সমকাল পত্রিকার ২০১৮ সালের ৫ মার্চের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই বছর ২৩ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসার শিক্ষক কর্তৃক নির্যাতনে গুরুতর আহত হয় হিফজ বিভাগের ছাত্র তাওহিদুল ইসলাম। পরবর্তীতে শিশুটির অবস্থা সংকটাপন্ন হলে তাকে স্থানীয় চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে রাজধানীস্থ বক্ষব্যাধী হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে ৫ মার্চ শিশু তাওহিদুল মারা যায়।
এছাড়া দৈনিক ভোরের কাগজেও ২০১৮ সালে একই সংবাদ ‘‘হুজুর আর মারবেন না, মরে যাবো’ আকুতি করেছিল তাওহিদুল’’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়।
মূলত গতকাল (৯ মার্চ, ২০২১) চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মারকাযুল ইসলামিক অ্যাকাডেমি নামের হাফেজি মাদ্রাসার আট বছর বয়সী এক ছাত্রকে বেধড়ক মারধরের ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক মাধ্যমে। সেই ভিডিওকে কেন্দ্র করেই ২০১৮ সালের ময়মনসিংহের মাদ্রাসা ছাত্র মারা যাওয়ার ঘটনাটি ‘নতুন খবর’ হিসেবে ভাইরাল হয়। যা বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে।