ঢাকারবিবার , ১৩ ডিসেম্বর ২০২০
  1. 1win Brazil
  2. 1win India
  3. 1WIN Official In Russia
  4. 1win Turkiye
  5. 1win uzbekistan
  6. blog
  7. casino
  8. casino en ligne fr
  9. casino onlina ca
  10. casino online ar
  11. casinò online it
  12. Covid-19
  13. Kasyno Online PL
  14. online casino au
  15. pinco
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বছরের প্রথম দিন কি এবার সবাই নতুন বইয়ের ঘ্রাণ পাবে?

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
ডিসেম্বর ১৩, ২০২০ ৪:১২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

২০২১ শিক্ষাবর্ষের বিনামূল্যের বই নিয়ে সঙ্কটে পড়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। প্রাক্কলিত দরের চেয়ে ৩০ থেকে ৩৭ শতাংশ কম দরে কাজ নেওয়া এবং হঠাৎ কাগজের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্নমানের কাগজ দিয়ে ছাড়পত্র নেওয়ার চেষ্টা ও ইন্সপেকশন এজেন্সিকে সহযোগিতা না করায় বই ছাপার কাজে অগ্রগতি নেই। ফলে বিগত দশ বছরের ধারাবাহিকতা রক্ষা করাটা অনেকটাই অনিশ্চিত।

‘তবে এখনও আশা আছে’ বলে জনিয়েছেন এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা।

গত ১০ বছর ধরে ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই পৌঁছে দিতে পেরেছে সরকার। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব হলেও বই ছাপা নিয়ে সঙ্কটের কারণে এবার সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বইয়ের প্রচ্ছদের ভেতরের অংশে জাতীয় ব্যক্তিত্বদের ছবি সংযুক্ত ও মানসম্মত বই দেওয়ার জন্য সরকারের সর্বোচ্চ মহলের নির্দেশনা রয়েছে। সেজন্য বইয়ের মান ঠিক রাখতে চলতি বছর ‘বাস্টিং ফ্যাক্টর’ (বইয়ের স্থায়িত্ব) ১৪ থেকে ১৬ করা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, হঠাৎ কাগজের দাম বেড়ে যাওয়ায় দু-একটি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান শুরু থেকেই নিম্নমানের কাগজ দিয়ে বই ছাপানোর চেষ্টা করছে। এনসিটিবি ও এজেন্সির কঠোর মনিটরিংয়ে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে এজেন্সিকে নানা ধরনের হুমকিও দিচ্ছে। এতে বইয়ের মান রক্ষা এনসিটিবির পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত ২৬ নভেম্বর অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেসের ১২০ টন কাগজ বাতিল করে মাধ্যমিকের পরিদর্শন এজেন্সি ইনডিপেনডেন্ট। ৬০ জিএসএমের (গ্রাম/স্কয়ার মিটার) পরিবর্তে ৫৫ জিএসএম, বাস্টিং ফ্যাক্টর ১৬ বছরের স্থলে ১৪.৮৮ পাওয়ার পর তা বাতিল করা হয়। নিয়মানুযায়ী মাধ্যমিকের বইয়ের কাগজের জিএসএম (গ্রাম/স্কয়ার মিটার) ৬০ এবং প্রাথমিকে ৮০ ঠিক রাখতে হবে।

সেই হিসেবে ওই প্রতিষ্ঠানের নিম্নমানের এসব কাগজ প্রেস থেকে সরিয়ে ফেলার কথা। কিন্তু তারা তা না সরিয়ে ওই ১১০ টন কাগজ ২ ডিসেম্বর আবার মান যাচাইয়ের জন্য চিঠি দেয়।

ইন্সপেকশন এজেন্সি বিভিন্ন রোল থেকে কাগজ সংগ্রহ করার ওই প্রতিষ্ঠানের লোকজন নিজেদের মেশিনে পরীক্ষা করে দেখেন এগুলোর জিএসএম ৫৫। পরে এজেন্সি এনসিটিবির কাছে লিখিত অভিযোগ করে জানায়, ‘অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেস কাগজের নমুনা পরিবর্তন করে তাদের পছন্দমতো কাগজের নমুনা আমাদের প্রতিনিধিকে নেওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করে।

এমতাবস্থায় সংগ্রহকৃত কাগজের নমুনা না দেওয়ায় আমরা কাগজের মান যাচাই কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হই। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এনসিটিবি চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানায় ইনডিপেনডেন্ট ইন্সপেকশন বিডি নামের প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে কাগজের মান যাচাই ছাড়াই নিম্নমানের কাগজে প্রাথমিক স্তরের ৬০ হাজার বই ছাপানোর পর তা উপজেলা পর্যায়ের পৌঁছানোর অনুমতি মেলেনি। বইগুলো কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত হলেও এনসিটিবি এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।

এনসিটিবি সূত্রে জনা গেছে, নিম্নমানের কাগজ বাতিল হয়েছে প্রায় ৪ হাজার মেট্রিক টন। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ছাপা বইও বাতিল হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠানের কাগজ বাতিল হয়েছে, তার মধ্যে অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেস, সরকার প্রিন্টিং প্রেস, কমলা প্রিন্টিং প্রেস, কচুয়া প্রিন্টিং প্রেস, গ্লোবাল, মিলন ও বর্ণশোভা প্রিন্টিং প্রেসসহ বড় বড় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

মুদ্রণ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি বছরের প্রাক্কলিত দরের চেয়ে গড়ে ৩০ থেকে ৩৭ শতাংশ কম দামে দরপত্র আহ্বান করে কাজ পায় মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলো। সেপ্টেম্বর মাসে ৬০ ডিএসএম কাগজের দাম ছিল ৪২ থেকে ৪৪ হাজার। গত ৫ ডিসেম্বর শনিবার বাজার দর ৫৮ থেকে ৫৯ হাজার টাকা। এছাড়া মুদ্রণকারীরা যেসব মিলের সঙ্গে চুক্তি করেছিল তারা এখন কাগজ দিচ্ছে না।

মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি ও বিপণন সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আগে প্রাক্কলিত মূল্যের চেয়ে কম দামে কাজ দেওয়া এবং পরে কাগজের দাম বাড়ায় কাগজ পাচ্ছে না মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলো। চাহিদার কারণে আগে টাকা নিয়ে পরে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে পেপারমিলগুলো। রেশনিং করে কাগজ দিচ্ছে। আমরা সরকারকে এ বিষয়ে আগেই সতর্ক করেছি। চুক্তি অনুযায়ী তারা কাগজ দিচ্ছে না। এই সঙ্কটের পেছনে দায়ী পেপার মিলগুলো। এ ছাড়া বড় বড় পেপার মিলও কাগজ উৎপাদন বন্ধ রেখেছে।’

সঠিক সময়ে বই পৌঁছানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তোফায়েল খান বলেন, ‘এটা সম্ভব না। দেরিতে কাজ দেওয়ার কারণে অনেকের জানুয়ারি পর্যন্ত সরবরাহের সুযোগ রয়েছে। তাহলে বছরের শুরুতে কীভাবে বই দেবে এনসিটিবি? আসলে শিক্ষার্থীদের একটি বই ধরিয়ে দিয়ে উদ্বোধন করতে হবে। আর পরে বাকি বই দিতে হবে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।’

জানা গেছে, আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য মোট সাড়ে ৩৪ কোটি বই ছাপানো হবে। এর মধ্যে মাধ্যমিকের বই ২৪ কোটি ৩৩ লাখ ৮৪ হাজার প্রাথমিক স্তরে ১০ কোটি ৫৪ লাখ। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তুরের বই ছাপানো হয়েছে ১৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। অন্যদিকে প্রাথমিক স্তরে বই ছাপা হয়েছে ৬২ শতাংশ। এসব বইয়ে ছাড়পত্র পাওয়া গেলেও সব বই উপজেলা পর্যায়ে এখনও পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।

সংশ্লিষ্টরা বলছে, এখনই এ কাজের গতি না বাড়াতে পারলে ১ জানুয়ারি অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেওয়া সম্ভব হবে না। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর আর মাত্র ১৯ দিন বাকি। অন্যান্য বছর এ সময় প্রায় ৭৫-৮০ শতাংশ ছাপার কাজ শেষ হয়ে যায়।

এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অগ্রণী ফেল করেছিল। কিন্তু ওই দিনই ১১০ টন কাগজ পাস করিয়েছে এবং আরও কাগজ আনছে। আমরা এই ২০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারবো। আমরা এখনও আশাবাদী। সব প্রেস সর্বশক্তি দিয়ে কাজ শুরু করেছে।’

চেয়ারম্যান দাবি করে বলেন, ‘আমাদের এখন প্রতিদিন ৫০ লাখের ওপর বই ছাপা হবে। বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) পর্যন্ত প্রাথমিকে ৭৫ শতাংশ এবং মাধ্যমিকের ৫০ শতাংশ বই ছাপা হয়েছে। আমরা এখনও চেষ্টায় আছি।

আপনার মন্তব্য লিখুন