ঢাকাশুক্রবার , ১৫ জানুয়ারি ২০২১
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

হরিলুটের আখড়াখানা গাইবান্ধা জেলা পরিষদ: ৬২ লাখ টাকার অনিয়ম প্রমাণিত!

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
জানুয়ারি ১৫, ২০২১ ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

গাইবান্ধা জেলা পরিষদে ৬২ লাখ ২৬ হাজার ৬৭০ টাকার অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণ হলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণের পর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে অভিযুক্তদের তথ্য চেয়ে গাইবান্ধা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একাধিকবার পত্র দিলেও তাদের তথ্য দেয়া হয়নি।

২০২০ সালে গাইবান্ধা জেলা পরিষদের কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে সরকারের বিভিন্ন দফতরে জেলা পরিষদের ৩০ দফা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা দীর্ঘসময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং প্রমাণাদি পর্যালোচনা ও সংশ্লিষ্টদের সাক্ষ্য নিয়ে ৩০ দফার মধ্যে ৯ দফা অভিযোগের সত্যতা পেয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

এরপর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে গাইবান্ধা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমানসহ প্রমাণিত অভিযোগগুলোর সাথে জড়িত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সচিব, প্রকৌশলী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সদস্যদের নাম-বর্তমান কর্মস্থলসহ যাবতীয় তথ্য চেয়ে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে এক দফা চিঠি দেন মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের জেলা পরিষদ শাখার দায়িত্বরত উপ-সচিব মোহাম্মদ তানভীর আজম ছিদ্দিকী।

যথাসময়ে প্রয়োজনীয় তথ্য না পেয়ে দ্বিতীয় দফায় আবারও গাইবান্ধা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠি দেন উপ-সচিব।

সর্বশেষ ২৪ ডিসেম্বর উপ-সচিব তানভীর আজম স্বাক্ষরিত ওই পত্রে বলা হয়, গাইবান্ধা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে আনীত ৩১টি অভিযোগের মধ্যে ৫, ৬, ৮, ৯, ১০, ১৫, ১৮, ২৭ ও ৩০ ক্রমিকের ৯টি অভিযোগ রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের তদন্তে সত্য প্রমাণিত হয়েছে।

অভিযোগের ৫ ও ৬নং দফায় অ্যাকাউন্ট পে-চেকের বদলে বেয়ারার চেকের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা উত্তোলনের বিষয়টি তদন্তে প্রমাণিত হয় এবং এই অভিযোগের সাথে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সংশ্লিষ্ট সদস্য এবং তৎকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জড়িত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

৮ ও ৯নং অভিযোগে জেলা পরিষদের হিসাব রক্ষক শামীম মিয়া জেলা পরিষদের সদস্য ডিজু বকশি’র নামে বেয়ারার চেকের মাধ্যমে ৩০ লাখ ৮২ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়। কোনো ধরনের আর্থিক বিধি পালন না করে এই অর্থ ব্যয় করা হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

১০নং অভিযোগে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিধিবহির্ভুতভাবে এক লাখ ৯৪ হাজার ছয়শ ৭০ টাকা ভ্রমণ ভাতা উত্তোলনের প্রমাণ পায় তদন্ত কমিটি।

১৫নং অভিযোগে বিধিবহির্ভুতভাবে রাজস্ব বাজেটের চিকিৎসা সহায়তা খাত থেকে চেয়ারম্যান আতাউরের বিরুদ্ধে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা চেকের মাধ্যমে উত্তোলণের প্রমাণ মিলেছে ওই তদন্তে।

এছাড়া ১৫টি প্রকল্পের মধ্যে ১০ প্রকল্পে পছন্দের ব্যাক্তিদের নিয়ে কমিটি গঠন করে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা প্রকল্পের অর্থ ছাড় করে। অন্যদিকে জেলা পরিষদের ফান্ড থেকে চেয়ারম্যান, তৎকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্টরা ১০ লাখ টাকা বেয়ারার চেকে উত্তোলণ করে বলে উল্লেখ করে তদন্ত কমিটি।

প্রমাণিত সবশেষ অভিযোগে সাঘাটার মীরপুর লঞ্চঘাট ইজারার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দরদাতাকে ঘাট ইজারা না দেয়ার জন্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, তৎকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়ী করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন রংপুর বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, মো. জাকির হোসেন, গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক মোছা. রোখছানা বেগম ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম।

গাইবান্ধা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুর রউফ তালুকদার জানান, মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত চিঠি অনুযায়ী তিনি কার্যক্রম শুরু করেছেন। পত্রে উল্লেখিত প্রমাণিত অভিযোগগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামের তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে। অভিযুক্তরা কে-কোথায় কর্মরত আছেন সেই তথ্যগুলো পেলেই মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

অভিযোগের ব্যাপারে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান জানান, তদন্ত প্রতিবেদনের ব্যাপারে তিনি কোনো চিঠি পাননি। তবে জানতে পেরেছেন তদন্ত প্রতিবেদনে অর্থ আত্মসাতের কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

আপনার মন্তব্য লিখুন