ঢাকাশুক্রবার , ২৭ নভেম্বর ২০২০
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ফেনীতে প্রতিমাসে গড়ে ৯ নারী-শিশু ধর্ষণ

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
নভেম্বর ২৭, ২০২০ ১০:৪৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ফেনী জেলায় আশংকাজনক হারে বাড়ছে ধর্ষণ-গণধর্ষণের ঘটনা। চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৩২৯ দিনে ১১৪ জন নারী জেলায় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

সেই হিসেবে চলতি বছর প্রতিমাসে গড়ে ৯ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। গত বছরের তুলনায় তিনগুনের বেশি পরিমাণ ঘটেছে। জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় ও স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে এসব তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি। এ ঘটনায় তার মা শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলা তুলে না নেয়ায় একই বছরের ৬ এপ্রিল মাদরাসার ছাদে নুসরাতের শরীরে আগুন লাগিয়ে দেয় দূর্বৃত্তরা। ১০ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় জড়িত ১৬ জনকে একই বছরের অক্টোবর মাসে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রদান করে। জেলায় এ ধরনের মর্মন্তুদ ঘটনার বিচারের রায় দিলেও থেমে নেই নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা। বরং ২০১৯ সালের রেকর্ড ছাপিয়ে তিনগুন পরিমাণ বেশি সংঘঠিত হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, জানুয়ারি থেকে গত ২৪ নভেম্বর মঙ্গলবার পর্যন্ত ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ১১৪ জন নারী-শিশু ধর্ষণের আলামত পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে ১১, ফেব্রুয়ারিতে ৫, মার্চে ১২, এপ্রিলে ৪, মে মাসে ৮ জন, জুনে ৭, জুলাইয়ে ১০, আগস্টে ১৩, সেপ্টেম্বরে ৯, অক্টোবরে ২২ ও নভেম্বর মাসে ১৩ জন নমুনা দিয়েছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৪৩, সোনাগাজীতে ২২ জন, দাগনভূঞায় ৮ জন, ছাগলনাইয়ায় ১৫ জন, পরশুরামে ৫ জন, ফুলগাজীতে ১১ জন রয়েছেন। এছাড়া আদালতে অভিযোগ করে নমুনা দিয়েছেন ৭ জন, পিবিআইতে অভিযোগ করে নমুনা দিয়েছেন ১ জন নমুনা দিয়েছেন। কোনদিন সর্বোচ্চ ৭.জনেরও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, গত ১১ মাসে জেলার ৬ থানায় ৫১টি ধর্ষণের মামলা.হয়েছে। এসব মামলায় আসামীর সংখ্যা ৬৮। ইতিমধ্যে পুলিশ ৩১টি মামলার.প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে। ধর্ষণের ঘটনার মধ্যে ফেনী মডেল থানায় ১৬, সোনাগাজী মডেল থানায় ১৩, ছাগলনাইয়া থানায় ১০, ফুলগাজী থানায় ৭, দাগনভূঞা থানায় ৩, পরশুরাম মডেল থানায় ২টি মামলা হয়েছে।

গত বছর জেলায় ৬৪টি যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের ঘটনার অভিযোগে মামলা হয়েছে। এর.মধ্যে ধর্ষণের ঘটনায় ৩৭টি ও যৌন নিপীড়নে ২৬টি মামলা হয়েছে। আর যৌতুকের জন্য খুনের মামলা হয়েছে একটি। যৌন নিপীড়নের ঘটনায় জেলার ছাগলনাইয়া থানায় ৬টি, ফেনী মডেল থানায় ৫টি, দাগনভূঞা থানায় ৪টি, সোনাগাজী থানায় ৫টি, পরশুরাম থানায় ৩টি ও ফুলগাজী থানায় ৩টি মামলা হয়েছে। নারী নির্যাতন ও যৌতুকের ঘটনায় জেলার ফুলগাজী থানায় ৮টি, ফেনী মডেল থানায় ৬টি, দাগনভূঞা.থানায় ৪টি, সোনাগাজী থানায় ৪টি, ছাগলনাইয়া থানায় ৪টি এবং পরশুরাম থানায় ২টি মামলা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ১২৯টি মামলায় ৩০৫ জনকে আসামি করা হয়েছে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ২২২ জন আসামিকে গ্রেফতার.করেছে।

জাতীয় মহিলা সংস্থা ফেনী শাখার চেয়ারম্যান খাদিজা আক্তার খানম রুনা “প্রতিদিনের বাংলাদেশ”কে জানান, ধর্ষণ শুধু জৈবিক চাহিদা নয়, এটি একটি ভঙ্গুর সামাজিক সংস্কৃতির প্রতিকৃতি। যথাযথ সামাজিক শিক্ষা বিশেষত মানবিক গুনাবলী চর্চার অভাব।থেকেই ধর্ষণের সূত্রপাত। অপসংস্কৃতির চর্চাও এর বড় কারণ। তবে ধর্ষণের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতাও বাড়ছে বলে তিনি মনে করেন।

নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব জান্নাতুল ফেরদৌস মিতা “প্রতিদিনের বাংলাদেশ” কে জানান, ধর্ষণের ক্ষেত্রে অতীতের সকল রেকর্ড পার করেছে। ধর্মীয় ও সামাজিক অবক্ষয়, মানবিক মূল্যবোধ, রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় দায়ী। যখন কোন ঘটনা ঘটে যায় তখন সরকার দলীয় লোক হওয়ায় তারা বহিস্কার করে। বিচারহীনতার ফলে এটি বেড়ে চলেছে।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর হাফেজ আহম্মদ জানান, ধর্ষণসহ নারীর প্রতি সহিংসতার যেসব ঘটনা ঘটে তার একটি অংশ জানা।যায় না। সামাজিক লোকলজ্জার ভয়ে অনেকে দেরিতে নমুনা দেয়ায় প্রমাণও মিলেনা।

পুলিশ সুপার খোন্দকার নূরুন্নবী “প্রতিদিনের বাংলাদেশ” কে জানান, ফেনীতে নারী ও শিশু।নির্যাতনের ঘটনায় থানায় মামলা কিংবা অভিযোগ পেলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আসামীদের আইনের আওতায় আনেন। পুলিশ সবসময় এসব ঘটনা রোধে তৎপর রয়েছেন। ধর্ষনের ঘটনার হওয়া মামলার বেশিরভাগই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়েছে। বাকিগুলো স্বল্প সময়ের মধ্যে জমা দেয়া হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন