ঢাকাবুধবার , ২ ডিসেম্বর ২০২০
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বুড়িমারীর পোড়ানো মামলায় আরও একজনের দায় স্বীকার জবানবন্দি

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
ডিসেম্বর ২, ২০২০ ১০:২৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে গণপিটুনি দিয়ে আবু ইউনুস মো. সাহিদুন্নবী জুয়েলকে হত্যার পর মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় ফরিদুল ইসলাম (৩৭) নামে আরও এক ব্যক্তি দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এ নিয়ে এ পর্যন্ত দায় স্বীকার করলেন ছয়জন।

বুধবার (০২ ডিসেম্বর) দুপুরে আমলি আদালত-৩ এর বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফেরদৌসী বেগমের আদালতে জবানবন্দি দেন ফরিদুল ইসলাম।
এর আগে রোববার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে গ্রেফতারকৃত ফরিদুলের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফেরদৌসী বেগম।

ফরিদুল লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের উফারমারা নাটারবাড়ি গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক মাহমুদুন্নবী বলেন, বহুল আলোচিত জুয়েল হত্যায় দায়ের করা হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ভবনে হামলার মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে ফরিদুলকে আটক করা হয়। তদন্তে এ ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা পওয়ায় হত্যা ও পুলিশের ওপর হামলার মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। রোববার (২৯ নভেম্বর) আদালত শুনানি শেষে ফরিদুলের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ নিয়ে বহুল আলোচিত এ মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে আদালত ১৬ জনের রিমান্ড মঞ্জুর করলেন। তিনদিনের রিমান্ডে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন ফরিদুল। এরপর বুধবার (২ ডিসেম্বর) তাকে আদালতে হাজির করা হলে ফরিদুল দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। এরপর তাকে লালমনিরহাট জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
জুয়েল হত্যার ঘটনায় দায়ের করা তিন মামলায় পুলিশ ৪০ জনকে গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে হত্যা মামলায় ১৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এর মধ্যে মূলহোতা বুড়িমারী ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি আবুল হোসেন ওরফে হোসেন ডেকোরেটর এবং মসজিদের খাদেম জোবেদ আলীসহ ছয়জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও নিশ্চিত করেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক। এর আগে গত ২৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বিকেলে পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে হামলার ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক আবু ইউনুস মো. সাহিদুন্নবী জুয়েল রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রিপাড়ার আব্দুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আবু ইউনুস মো. সাহিদুন্নবী জুয়েল বৃহস্পতিবার বিকেলে সুলতান রুবায়াত সুমন নামে একজনকে সঙ্গে নিয়ে বুড়িমারী বেড়াতে আসেন। বিকেলে বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করেন তারা। নামাজ শেষে পাঠ করার জন্য মসজিদের সানসেটে রাখা কোরআন শরিফ নামাতে গিয়ে অসাবধানতাবশত কয়েকটি কোরআন ও হাদিসের বই তার পায়ে ওপর পড়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে মুয়াজ্জিনের কথা কাটাকাটি হয়। এরপর আশপাশের লোকজন ছুটে এসে সন্দেহবশত জুয়েল ও সুলতান রুবায়াত সুমনকে পাশে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ভবনের একটি কক্ষে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে পাটগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, ওসি বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদে যান। সন্ধ্যায় পুরো বাজারে এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, কোরআন অবমাননার দায়ে দুই যুবককে আটক করা হয়েছে। সে সময় উত্তেজিত হয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের দরজা-জানালা ভেঙে প্রশাসনের কাছ থেকে জুয়েলকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে মরদেহ টেনে পাটগ্রাম বুড়িমারী মহাসড়কে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দেয় স্থানীয়রা। সে সময় বিক্ষুব্ধ জনতা মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে।

সন্ধ্যা থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা থানা পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দফায় দফায় চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। সে সময় বিক্ষুব্ধ জনতার ছোড়া ইট পাথরের আঘাতে পাটগ্রাম থানার ওসি সুমন্ত কুমার মহন্তসহ ১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ১৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। রাত সাড়ে ১০টার দিকে লালমনিরহাটের ডিসি আবু জাফর ও এসপি আবিদা সুলতানা অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। নিহত জুয়েলের সঙ্গী সুলতান রুবায়াত সুমনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত জুয়েলের চাচাত ভাই সাইফুল আলম, পাটগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহজাহান আলী ও বুড়িমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত বাদী হয়ে হত্যাসহ পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনাস্থলের ভিডিও দেখে আসামি শনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে এখন পর্যন্ত ৪০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা সবাই বুড়িমারী এলাকার বাসিন্দা।

আপনার মন্তব্য লিখুন