ঢাকামঙ্গলবার , ২২ ডিসেম্বর ২০২০
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মুলা এখন কৃষকের গলার কাঁটা, ১ মণ মুলায় হচ্ছে না ১০০ গ্রাম চাল!

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
ডিসেম্বর ২২, ২০২০ ৭:১৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

রাশেদুল ইসলাম রাশেদ।। শীতকালীন সবজি মুলা চাষ করেছেন লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার কৃষক। বর্তমানে কোন ক্রেতা না থাকায় মুলা ফ্রিতেও কেউ নিচ্ছিন না। মুলা চাষ করে কৃষকদের মাঝে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে জমি পরিষ্কার করতে না পারায় একই জমিতে আলু রোপণে দেরি হয়ে যাচ্ছে। কারণ মুলার কোনো ক্রেতা নেই, যারা আসছেন প্রতি মণ ৮-১০ টাকা বলছেন। ফলে মুলাই এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে জেলার অনেক কৃষকের। আলু রোপণের স্বার্থে তারা এখন পাইকারদের বিনামূল্যে মুলা দিয়ে দিচ্ছেন।

লালমনিরহাট জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, পাঁচ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৭ হাজার ৮১৩ হেক্টর জমিতে আলুসহ বিভিন্ন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সুনির্দিষ্টভাবে কতটুকু জমিতে মুলা চাষ হয়েছে তা জানা না গেলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি জমিতে মুলা চাষ হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

লালমিনরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ ও পাটগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে প্রচুর পরিমাণে মুলাসহ অন্যান্য সবজি চাষ হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে জেলার স্থানীয় বাজারগুলোতে প্রতি কেজি মুলা প্রকারভেদে ৫০-৬০ টাকা বিক্রি হয়েছে। কৃষকও লাভবান হয়েছে । কিন্তু বিপত্তি ঘটেছে গত ১৫ দিন থেকে । ক্ষেতের মুলা ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে । ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছে না কৃষক।

এখন খুচরা বাজারে ২-৩ টাকা কেজি হলেও পাইকারিতে ৮-১০ টাকা মণও নিচ্ছে না। ফলে ক্ষেত থেকে মুলা তুলতে যে শ্রমিক খরচ, তাও উঠছে না কৃষকের।
আক্ষেপ করে চাষিরা বলছেন, আগাম মুলা নষ্ট হয়েছে বৃষ্টি-বন্যাতে। দ্বিতীয় দফায় ফলন ভালো হলেও দাম নেই। এক মণ মুলা বেঁচে ১০০ গ্রাম চালও কেনা যাচ্ছে না। এখন বাজারে প্রতি কেজি সাধারণ মানের আটাশ চালও কিনতে লাগে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা।

আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের কৃষকরা জানান, মুলা নিয়ে তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। প্রতি দোন জমির (২৭ শতক) মুলা বিক্রি করেও ১ হাজার টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, মুলার ক্রেতা নেই। পরের ফসল আবাদের সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে।

আলু ও ভুট্টা লাগানোর জন্য ব্যবসায়ীদের এখন তারা বিনামূল্যে মুলা দিচ্ছেন। তারা নিজ খরচে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন।

পাটগ্রাম উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের সিদ্দিক হোসেন বলেন, মুলা শুরুতেই ৫০থেকে ৬০টাকা দরে বিক্রি করছি। বর্তমানে কোন পাইকার মুলা কিনছে না তাই ক্ষেতেই মুলা নষ্ট হচ্ছে। সীমান্তবর্তী দুরাকুটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, চাষিরা ট্রাক্টর দিয়ে মুলাক্ষেত নষ্ট করছেন।

চাষিরা বলেন, এবার ১০ বিঘা জমিতে মুলা চাষ করেছি। প্রথমবার ৪৫ ও দ্বিতীয়বার ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। দাম না পাওয়ায় নিজেই মুলা নষ্ট করছি। ভুট্টা-আলু লাগালে হয়তো ক্ষতি কিছুটা পোষানো যাবে।

লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. শামীম আশরাফ বলেন, রবি মৌসুমে বেশিরভাগ চাষি মুলা আবাদ করেছেন। বাজারে চাহিদা না থাকায় তারা দাম পাচ্ছেন না। যেকোনো ফসল ফলানোর আগে চাহিদার বিষয় খেয়াল রাখা দরকার ।
এব্যাপারে কৃষি বিভাগ থেকে বারবার বলার পরও কৃষকরা আমলে না নেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা ।

আপনার মন্তব্য লিখুন