ঢাকারবিবার , ৩১ জানুয়ারি ২০২১
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সেই অভাবী জমিলা পেলো সিটি নিউজের সহায়তা

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
জানুয়ারি ৩১, ২০২১ ৬:০০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আনিসুর রহমা,স্টাফ রিপোর্টার।। প্রতিদিন কত খবর আসে যে কাগজের পাতা ভরে, জীবন পাতার অনেক খবর রয়ে যায় অগোচরে—” সত্যিই তাই। গত শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) “অভাবের কারণে ব্রীজ থেকে কোলের শিশুকে পানিতে ফেলে দিলেন মা” শিরোনামে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয় প্রতিদিনের বাংলাদেশ সহ একাধিক গনমাধ্যমে।গনমাধ্যমের এমন খবর দেখে পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে আগ্রহ প্রকাশ করেন অনলাইন মাল্টিমিডিয়া নিউজ পোর্টাল
সিটি নিউজ ঢাকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আতিক। তিনি সিটি নিউজ এর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ফজলুল করিমের মাধ্যমে অভাবী মা জমিলা বেগমকে ১০ হাজার টাকা সহায়তা দিয়েছেন। শুক্রবার(২৯ জানুয়ারি) রাত আড়াইটার দিকে সিটি নিউজ এর সাংবাদিক ফজলুল করিম কুড়িগ্রাম থেকে ৬৪ কিলোমিটার দুরের সীমান্তবর্তী গ্রামে গিয়ে জমিলার কাছে ১০ হাজার টাকা পৌঁছে দেন।

জমিলা কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীর বলদিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম কেদার গ্রামের জয়নাল আলীর মেয়ে। স্বামী পরিত্যক্তা জমিলা দেড় বছরের সন্তান জাহিদকে নিয়ে বসবাস করেন দিনমজুর বাবার সংসারে। গত শুক্রবার (২৯ শে জানুয়ারি) দুপুরে বাবার ওপর অভিমান করে বাড়ী থেকে বের হয়ে যান জমিলা। শিশুপুত্র জাহিদকে ব্রীজের উপর থেকে ২০ ফুট নিচে পানিতে ফেলে দেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা কাশিমবাজার ব্রীজ থেকে ফেলে দেয়া ফুটফুটে বাচ্চাটিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দুলাল হোসেনের সঙ্গে শুক্রবার গভীর রাতে কথা হয়। সিটি নিউজকে তিনি জানান, ‘ব্রীজের উপর থেকে বাচ্চাটিকে পানিতে ফেলে দেয়া দেখে আমি ছুটে যাই। একটা চিৎকার দিলে আরো দুজন ছুটে আসেন। সঙ্গে সঙ্গে পানিতে লাফ দিয়ে ওই দুজনের সহযোগিতায় বাচ্চাটিকে জীবিত উদ্ধার করি।’

রিপোর্টের সূত্রধরে সিটি নিউজের প্রতিনিধি রাত ৯ টায় কুড়িগ্রাম শহর থেকে রওনা হন জমিলার খোঁজে। তার সাথে যুক্ত হন জাগো নিউজ ২৪ এর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি মাসুদ রানা ও বার্তা বাজার পত্রিকার প্রতিনিধি সুজন মোহন্ত ।
৩ জন মিলে এরপর বলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমানের বাড়িতে যান। তার সহযোগীতায় কনকনে শীতের রাতে সড়কের পর সড়ক পেরিয়ে জমিলা বেগমের খোঁজ পান। জমিলা পুলিশের ভয়ে ভারতীয় সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার কাছাকাছি খালার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখানে রাত ৩.৩০ মিনিটে জমিলা বেগমের দেখা মেলে। জমিলার চোখে মুখে তখন আতঙ্কের ছাপ।

জমিলার বয়স এখন ৩৫ বছর। বড় বোনের চার সন্তান, নিজেরা দুই জন, ছোট ভাইয়ের তিনজন, বাবা মা দুই জন মিলে মোট ১১ জনের সংসার। আয় বলতে বাবা ও মায়ের দিন মজুরী। তা দিয়ে বাবার সংসারই চলে না।

জমিলা বলেন, সব মিলে আমরা সবাই বোঝা হয়েছি বাবার। সেই বোঝার উপর আরেক বোঝা হয়ে উঠেছিল দেড় বছরের শিশুপুত্র জাহিদ। ভেবেছিলাম তাকে ফেলতে পারলেই জীবন হবে দায় মুক্ত। কোনভাবে কেটে যাবে জীবন। কিন্তু তা আর হয়নি। এ যে জীবনে অনেক বড় ভুল ছিল।
এত বড় অপরাধ করার পরও কেউ এই গরীবের জন্য ১০ হাজার টাকা, তাও আবার ঘটনার দিন মধ্য রাতেই পাঠাতে পারে জেনে নিজেকে আরো অপরাধী মনে হচ্ছে বলে জানান আবেগাপ্লূত জমিলা।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোখলেসুর রহমান জানান, কোলের শিশুকে ব্রীজ থেকে পানিতে ফেলে দেয়ার ঘটনাটি অত‍্যন্ত মর্মান্তিক। তিনি বলেন, এ ঘটনায় মহিলাকে দশ হাজার টাকা দিয়ে সিটি নিউজের তাৎক্ষণিক সহযোগিতা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন