ঢাকাশুক্রবার , ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

লালমনিরহাটে ওএমএস ডিলারের কাছে চালের বদলে পেল গৃহবধূ চোখে আঘাত, আহত-৫

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২ ৭:৩১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

লালমনিরহাট প্রতিনিধি।। লালমনিরহাটে ওএমএস ডিলারের কাছে চালের বদলে পেল গৃহবধূ চোখে আঘাত, সহ ৫ জন আহত হয়েছে। ওএমএস ডিলারের লেলিয়ে দেয়া দালালের আঘাতে দিনমজুরে স্ত্রী মনি বেগম (৩০) নামক এক গৃহবধূ চোখ মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। ফলে ৩দিন ধরে চোখে অন্ধকার দেখছেন। শুধু মনিই নন, তার সাথে থাকা আর ৪ জন দিনমজুর পরিবারের স্ত্রীও মারপিটের শিকারে আহত হয়েছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে, মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাট পৌরসভাধীন ৪নং ওয়ার্ডের বিডিআর হাটখোলা এলাকার ওএমএস ডিলার এসকে খাজামুদ্দিনের চাল বিতরণ কেন্দ্র।

জানা গেছে, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় (ওএমএস) সারাদেশের ন্যায় লালমনিরহাটেও খোলা বাজারে চাল ও আটা বিক্রি কার্যক্রম চলছে। ৩০ টাকা কেজি দরে ১৫ দিন পরপর পাঁচ কেজি করে চাল কিনতে পারবেন নিম্নআয়ের মানুষজন। তবে যাদের টিসিবি কার্ড নেই তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এনআইডি কার্ডের বিপরীতে একই পরিমাণ চাল দেওয়া হবে। এর লক্ষ্যে ওইদিন সকালে লালমনিরহাট পৌরসভাধীন ৪নং ওয়ার্ডের বিডিআর হাটখোলা এলাকার ওএমএস ডিলার এসকে খাজামুদ্দিনের চাল বিতরণ কেন্দ্রে সকালে যান কলাবাগান এলাকার দিনমজুরের স্ত্রী মনি বেগম সহ একই এলাকার আরও ৪ জন।

কিন্তু সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও তারা চাল পাচ্ছিলেন না। চাল বিতরণে দীর্ঘ লাইনও নিয়ন্ত্রণ করেন ডিলারের নিয়োজিত দালাল গণি ও তোফাজ্জল। সেই গণি ও তোফাজ্জল নামক দুইজন দালাল ওএমএস ডিলার এসকে খাজামুদ্দিনের সামনেই হট্রগোল শুরু করেন। একপর্যায়ে গণি ও তোফাজ্জলের আঘাতে আহত হন, ৪নং ওয়ার্ডের কলাবাগান এলাকার দিনমজুর আশরাফুল আলমের স্ত্রী মনি বেগম সহ একই এলাকার প্রতিবন্ধী আইয়ুব আলীর স্ত্রী রুবিনা বেগম (৪০), রংমিস্ত্রির নাজমুল হকের স্ত্রী খাদিজা খাতুন (২৫), রিকশা চালক জাহাঙ্গীর হোসেনের স্ত্রী রাশিদা বেগম (২৫), দিনমজুর রবি আলমের স্ত্রী আঞ্জু বেগমকে (৪০)। তাদের মারপিট শিকার চাল নিতে আসা মহিলাদের শরীরে জখম সৃষ্টি হয়। এতে কারও মাথার চুল ধরে টানা হেঁচরা, কারও নাক, কারও কান ও গলায় নিচে রক্তাক্ত জখম সৃষ্টি হলেও মনি বেগম বেশি ভাল নেই। তিনি তার ডাক চোখ মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। ফলে মনি বেগম ৩দিন ধরে চোখে অন্ধকার দেখছেন।

দিনমজুর আশরাফুল আলমের স্ত্রী মনি বেগম বলেন, ওএমএস ডিলার খাজামুদ্দিনের সামনেই গণি ও তোফাজ্জল আমাদের ৫ জনকে চাল না দিয়ে মারপিট শুরু করেন। তখন ডিলার গেট বন্ধ করে বাসায় চলে যান। তাদের মারের আঘাতে দুপুরের পর থেকে আমি আমার ডান চোখ দিয়ে আর কিছুই দেখছেন না। গরীব হলেও সম্মানের সাথে চলি। তাই থানা ও হাসপাতালে যাইনি। স্থানীয় চিকিৎসকদের চিকিৎসা নিচ্ছি।

একই এলাকার রুবিনা বেগম বলেন, চাল পায়নি। আমাকেসহ আমাদের ৫ জনকে মারপিট করেন ডিলারের দালালরা। সেই সময় আমার স্বামীর দেয়া একমাত্র গলায় থাকা রুপার চেনটিও দালালরা কেড়ে নেন।

কলাবাগান এলাকার প্রতিবন্ধী আইয়ুব আলী বলেন, আমি একজন প্রতিবন্ধী মানুষ। আমি বার বার ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে ডিলার খাজার কাছে গেলেও আমাকে কোন চাল দেন না। উল্টো আমার সাথে খারাপ আচারণ করেন। তিনি তার পছন্দের লোকজনকে চাল দেন। অধিক লাভের আশায বাহিরে বিক্রি করেন।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট পৌরসভাধীন ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজিজুল হক তুহিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তারা চাল পায়নি বরং ওই ৫ জন মহিলা মারপিটে শিকার হয়েছেন বলে আমাকে জানিয়েছেন। ৫ জনের মধ্যে মনি অবস্থা গুরুতর। তিনি তার ডাক চোখ দিয়ে কিছুই দেখতে পারছেন না। এ বিষয়টি আমি জেলা খাদ‍্য নিয়ন্ত্রক রফিকুল ইসলামকে অবগত করেছি। তিনি প্রয়োজনীও ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস আমাকে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে ৪নং ওয়ার্ডের বিডিআর হাটখোলা এলাকার ওএমএস ডিলার এসকে খাজামুদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে ফোন কেটে দেন।

এ ব্যাপারে লালমনিরহাট জেলা খাদ‍্য নিয়ন্ত্রক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি, কিন্তু কেউ অভিযোগ করেনি। যেহেতু জানালেন বিষয়টি ভিজিট করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন