ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৩ ডিসেম্বর ২০২০
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শীতের আগমনের সাথে সাথে সাতক্ষীরায় চাহিদা বেড়েছে মাটির তৈরি ভাড়ের

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
ডিসেম্বর ৩, ২০২০ ৩:১১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বাংলা শিল্পের ঐতিহ্য অন্যতম স্থান দখল করে আছে মাটির তৈরি মৃৎশিল্প। প্রাচীন আমল থেকেই এই শিল্পটি লালন করে আসছে ভারত উপমহাদেশের বিভিন্ন কুমার শিল্পীরা। বর্তমান শীত আগত আর এই শীতের আগমন বার্তায় বয়ে নিয়ে এসেছে একদিকে যেমন রসের চাহিদা আবার অন্যদিকে চাহিদা বেড়েছে মাটির রস রাখার পাত্র বা ভার।

খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা জেলা রস রাখার পাত্রটিকে ভার নামে ডাকা হয়। শীতের আগমনকে ঘিরে চাহিদা বেড়েছে ভাড়ের।তাইতো সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন কুমার শিল্পীরা ব্যস্ত তাদের ভাড় তৈরীর কাজে। সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গিয়েছে কুমার শ্রেণীর পেশাজীবী মানুষগুলো দিনরাত পরিশ্রম করে তৈরি করছেন মাটির বিভিন্ন জিনিস। সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটা থানার বাজারে কুমার পাড়তে দেখা গেছে বিভিন্ন রকমের মাটির জিনিস রোদে শুকানোর জন্য রোদে শুকিয়ে পরে সেগুলো আগুনে পুড়িয়ে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়া হবে চলছে তারই কাজ। সেখানে এক কুমারের সাথে কথা বললে তিনি জানান তারা প্রতিদিন সকালবেলা মাটি দিয়ে তৈরি করেন তাদের জিনিস গুলো পড়ে সেগুলো ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে দিতে হয় পাজাঁয়। রোদে শুকিয়ে শক্ত করে না নিলে ভাল মানের শিল্প কার্য সম্ভব হয় না বলে জানান এই কর্মকার।

মাটির আসবাবপত্র টি যেখানে পুড়িয়ে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়া হয় সেটিকে পাঁজা বলা হয়।সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ২ নাং কুশখালী ইউনিয়নের সাতানি গ্ৰাম অশোক পালের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সেখানেও মাটির তৈরি ভার সহ মাটির তৈরি মালসা,সরা এবং মাটির কলস রোদে শুকানো হচ্ছে। পাজাঁতেও কিছুসংখ্যক ভাড় পুড়িয়ে রাখা হয়েছে ঠান্ডা করার জন্য।

উপস্থিত অশোক পালের মা কমলা রনী( ৫৫) কাছ থেকে জানা যায় পূর্বপুরুষদের থেকে চলে আসছে এই কাজটি। তিনি আরো জানান শীত আসছে বলে এখন ভাড় কিছুটা বাজারে চলছে অন্যান্য পণ্য গুলো এখন আর বাজারে আগের মত চাহিদা নেই। মানুষ এখন মাটির তৈরি জিনিস গুলো বেশি একটা ব্যবহার করতে চায় না তার জন্য আমাদের হাতের কাজ খুবই কম আমাদের অন্যান্য প্রতিবেশীরা এখন বিভিন্ন পেশায় চলে যাচ্ছে এই শিল্পের এখন ঘুনে ধরা অবস্থা। এই শিল্পের উপর নির্ভর করে সংসার চলছে না বললেই চলে বলে জানান অশোক পালের মা।

নিবিড় বিচক্ষণে বসে থাকা অশোক পালের ঠাকুরমা নীলা রানী (৮৫) সাংবাদিকদের জানান তার বয়সে তিনি দেখেছেন এই শিল্পে চাহিদা একসময় আকাশ ছুয়া। বাংলার মানুষ মাটির হাড়িতে রান্না করতো। এই প্রবীণ ঠাকুমা নীলা রাণী আমাদেরকে আরো জানান গ্রামের এক সময় সবথেকে প্রচলিত ছিল মাটির কলসে পানি রাখতো মাটির সকল জিনিসপত্র সেসময় গ্রহণযোগ্যতা ছিল গ্রামের বাজারগুলোতে কিন্ত এই শিল্পের চাহিদা বর্তমান নেই বললেই চলে। প্রবীণ এই মৃৎশিল্প সাথে জড়িত নীলা রাণী তার পুরনো দিনের কথা মনে করে তিনি বলেন সাতক্ষীরা জেলা তে এক সময় বিভিন্ন মেলা এবং পুজোর আনন্দে বড় বড় মেলা অনুষ্ঠিত হতো সেখানে প্রচুর মাটির তৈরি জিনিস এবং বাচ্চাদের তৈরি বিভিন্ন রকমের হাঁড়িকুড়ি পুতুলের খেলনা বিক্রয় হত বর্তমান সেসব অনুষ্ঠানগুলো হতে দেখা যায় না।

কালের বিবর্তনে বর্তমান এই শিল্পটি বিলীনের পথে আগের বর্তমান এই চাহিদা কমে গিয়েছে বিভিন্ন কারণে বলে মনে করেন এই কাজের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা।

সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা মিলবে আবারো ফিরে আসবে এই শিল্পের আগের অবস্থান এমনটাই ধারণা করে আশায় বুক বেধে বসে আছেন সাতক্ষীরা জেলার মৃৎশিল্পরে কারিগররা।

আপনার মন্তব্য লিখুন