ঢাকারবিবার , ২৮ আগস্ট ২০২২
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কাউন্সিল ছাড়াই নতুন কমিটি করার চেষ্টা বিএনপির!

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
আগস্ট ২৮, ২০২২ ৪:৩০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

শরীফুল ইসলাম,ঢাকাঃ বিএনপির বর্তমান নির্বাহী কমিটি গঠন করা হয় প্রায় সাড়ে ৬ বছর আগে। সাড়ে ৩ বছর আগেই এ কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। কিন্তু দলের গঠনতন্ত্র ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) উপেক্ষা করে জাতীয় কাউন্সিল ছাড়াই নতুন নির্বাহী কমিটি করার চেষ্টা করছে বিএনপি হাইকমান্ড। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলকে গতিশীল করার লক্ষ্যেই নতুন কমিটি করার চেষ্টা চলছে।

সূত্র জানায়, জাতীয় কাউন্সিল ছাড়া বিএনপি যে নতুন কমিটি করতে চাচ্ছে তাতে শীর্ষ নেতৃত্বে কোন পরিবর্তন আসবে না। শুধু শূন্য পদগুলো পূরণ করে বর্তমান কমিটির সঙ্গে কিছু নাম সংযোজন-বিয়োজন করে গতানুগতিকভাবে আরেকটি কমিটি করা হবে। তবে বর্তমান কমিটিতে থাকা কিছু নেতাকে অপেক্ষাকৃত ভাল পদ দেয়া হবে। আর একেবারে নিষ্ক্রিয় এমনকিছু নেতাকে বাদ দিয়ে নতুন করে কিছু নেতাকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দেয়া হবে। তবে কমিটির পরিধি প্রায় একই থাকবে।

উল্লেখ্য, সাড়ে ৩ বছর আগে বিএনপির বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর এ পর্যন্ত বেশ ক’বার জাতীয় কাউন্সিলের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে সময় বাড়িয়ে নিলেও দলীয় হাইকমান্ডের অনীহার কারণে শেষ পর্যন্ত কাউন্সিল ছাড়াই নির্বাহী কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। এ জন্য দলের কিছু নেতা ফাইলওয়ার্ক করছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন কমিটি করে দলকে গতিশীল করতে চায় বিএনপি হাইকমান্ড।


সূত্র জানায়, দলের একটি বড় অংশই কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি করার পক্ষে মত দিলেও বিএনপি হাইকমান্ড বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় কাউন্সিল করতে চাচ্ছেন না। তাই হাইকমান্ডের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে দলের এমন কিছু নেতাও জাতীয় কাউন্সিল চায় না। তারা দলের অন্য নেতাদের বোঝাচ্ছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কাউন্সিল হলে তাতে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান থাকতে পারবেন না। আর তাদের ছাড়া দলের জাতীয় কাউন্সিল করলে সার্বিক পরিস্থিতি সামাল দেয়াও কঠিন হবে।

এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল কবে হবে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সর্বস্তরে দল পুনর্গঠনের কাজ চলছে। সেই সঙ্গে রাজপথে সরকারবিরোধী আন্দোলনের প্রস্তুতিও চলছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে সাড়ে ৬ বছর আগে বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল হলেও নতুন কাউন্সিল করে নির্বাহী কমিটি পুনর্গঠনের বিষয়ে দলীয় হাইকমান্ডের কোন আগ্রহ না দেখে কিছু কেন্দ্রীয় নেতা হতাশ হয়েছেন। তাই তারা এখন দলীয় কর্মকাÐে অংশ নিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। তারা দলের ভেতরে ও বাইরে বিচ্ছিন্নভাবে এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেও হাইকমান্ডের রোষানলে পড়ার ভয়ে প্রকাশ্যে তেমন কিছু বলছেন না।
প্রায় সাড়ে ৩ বছর আগে বিএনপির বর্তমান নির্বাহী কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত অধিকাংশ রাজনৈতিক দল মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় কাউন্সিল করলেও বিএনপি তা করছে না। তবে বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে দলটি কয়েক দফা নির্বাচন কমিশন থেকে সময় বাড়িয়ে নিয়েছে।

সূত্র মতে, জাতীয় কাউন্সিল ছাড়া বিএনপির নতুন কমিটি হলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন তারেক রহমানের নেক নজরে থাকা বিএনপির কিছু নেতা। তারা তারেক রহমানের আশীর্বাদ নিয়ে দলের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদ প্রত্যাশী। তারা মনে করছেন, জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি হলে খুব বেশি সুবিধা করতে পারবেন না। তাই তারা চাচ্ছেন কাউন্সিল ছাড়া কমিটি হলে সে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করবেন তারেক রহমান। এ কারণে তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে সহজ হবে। এ ছাড়া নিজেদের পছন্দের অন্য নেতাদেরও পদ পাইয়ে দেয়া যাবে। এ কারণেই তারা তারেক রহমানকে কাউন্সিল না করে নতুন কমিটি করার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানা যায়।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, নতুন কমিটি গঠনের জন্য বিএনপিকে আর বেশি সময় দেয়া হবে না। তাই জাতীয় কাউন্সিল না করলেও বিএনপিকে নতুন কমিটি গঠন করে নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হবে। এ পরিস্থিতিতে বিএনপি হাইকমান্ড কাউন্সিল না করেই কমিটি গঠনের বিষয়ে কাজ শুরু করেছেন। তবে করোনা পরিস্থিতি ভাল হয়ে যাওয়ায় জাতীয় কাউন্সিল না করার জন্য সুনির্দিষ্ট কি কি কারণ দেখানো যায় সে বিষয়ে কাজ করছেন দলটির কজন সিনিয়র নেতা। দলটির শীর্ষ নেতারা চাচ্ছেন হয় নির্বাহী কমিটির সভা ডেকে সবার মতামত নিয়ে রেখে পরে একটি কমিটি ঘোষণা দেয়া হবে। আর তা না হলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অনুমোদন নিয়ে নিজের মতো করে একটি কমিটি গঠন করে ফেলবেন। আর এভাবে কমিটি করলেও দলের কোন নেতা প্রকাশ্যে কোন আপত্তি করবে না।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুসারে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে ৩ বছর পর পর জাতীয় কাউন্সিল করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বিএনপির সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিল হয়েছে ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ। সে হিসেবে সাড়ে প্রায় ৬ বছর সময় পার হয়ে গেছে। তাই দলের জাতীয় কাউন্সিল নির্বাহী কমিটিতে স্থান পেতে আগ্রহী নেতারা সিনিয়র নেতাদের প্রতি চরম ক্ষুব্ধ। কারণ, বিএনপির পরবর্তী নির্বাহী কমিটিতে স্থান পেতে দুই শতাধিক নেতা অপেক্ষায় রয়েছেন। এ ছাড়াও অপেক্ষায় রয়েছেন সংস্কারপন্থী কিছু বিএনপি নেতা। এ পরিস্থিতিতে বিএনপির সিনিয়র নেতারা ঘরে বাইরে চাপের মুখে রয়েছেন। এ ছাড়া যারা ৫৯২ সদস্যের বর্তমান নির্বাহী কমিটির অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন তারাও ভাল ভাল পদে যাওয়ার জন্য নতুন কমিটির অপেক্ষায় রয়েছেন।

বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক সময় দলের অধিকাংশ নেতা জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নির্বাহী কমিটি গঠনের কথা বললেও এখন সে অবস্থান থেকে সরে এসেছেন। বিশেষ করে তারেক রহমানের মনোভাব জানতে পেরে তারা এ বিষয়ে নমনীয় হয়েছেন। কারণ, লন্ডন প্রবাসী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও চান বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় কাউন্সিল ছাড়াই নতুন কমিটি হোক। তিনি মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দলের জাতীয় কাউন্সিল হলে তার নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। এ ছাড়া শর্ত স্বাপেক্ষে সাময়িক মুক্তি পেয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া গুলশানের বাসায় অবস্থান করলেও তিনি জাতীয় কাউন্সিলে উপস্থিত থাকতে পারবেন না।

আপনার মন্তব্য লিখুন